নিদাহাস ট্রফি: কোত্থেকে এলো, কিভাবে এলো

দেখতে দেখতে নিদাহাস ট্রফি শেষ প্রায়। সমাপ্তি থেকে মাত্র দুটি ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে আছে এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তিন দলের এই প্রতিযোগিতায় ইতোমধ্যেই ফাইনালে উঠেছে ভারত। শুক্রবার অলিখিত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তা ঠিক আছে, কিন্তু এই আসরটা এলো কোত্থেকে? এর নাম নিদাহাস ট্রফিই বা কেনো? 

নিদাহাস শব্দটি সিংহলিজ। এর বাংলা হলো স্বাধীনতা। চলমান টুর্নামেন্ট নিদাহাস ট্রফির দ্বিতীয় আসর। প্রথম ও শেষ আসরটার মঞ্চায়ন হয়েছিল দুই দশক আগে, ১৯৯৮ সালে। শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি স্মরণীয় করে রাখতে প্রথমবার আয়োজন করা হয় নিদাহাস বা স্বাধীনতা ট্রফির। সেবারও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল তিন দল। শ্রীলঙ্কা, ভারত ও নিউজিল্যান্ড খেলেছিলো সেই আসরে।

প্রথম আসরটা অবশ্য ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় গত বছর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকর্তারা জানান, এবারের ত্রিদেশীয় সিরিজটা হবে টি-টোয়েন্টিফরম্যাটে। টুর্নামেন্টের সব ম্যাচের মঞ্চ নির্ধারণ করা হয় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামকে। তবে আগের আসরটা হয়েছিল ভিন্ন তিনটি ভেন্যুতে।

অবশ্য তখন টুর্নামেন্টের ম্যাচ সংখ্যাও বেশি ছিল। রবিন রাউন্ডে প্রত্যেকটি দলের ম্যাচ ছিল ছয়টি করে। ওই আসরে প্রত্যাশিতভাবেই ফাইনাল খেলেছিল শ্রীলঙ্কা। শিরোপা লড়াইয়ে তাদের সঙ্গী ছিল ভারত- যারা কিনা একটা ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল। মোহাম্মদ আাজহারউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সেই দলটি আবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।

প্রথম টুর্নামেন্টের ১০ ম্যাচের পাঁচটিই খেয়ে নিয়েছিল বৃষ্টি। এবারের আসরে কোনো ম্যাচ পরিত্যক্ত না হলেও বৃষ্টির আনাগোনা ছিল। এ কারণে দু-একটা ম্যাচ শুরুতে বিলম্ব-ও হয়েছিল। এই বৃষ্টির কারণে বিশ বছর আগে ছয় ম্যাচের চারটিতেই খেলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। যে দুটো ম্যাচ কিউইরা খেলেছে, দুটোই আবার হেরেছে শ্রীলঙ্কার কাছে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছয় উইকেটের হার দিয়ে এবারের আসর শুরু করেছিল রোহিত শর্মার ভারত। কিন্তু প্রথম আসরে লঙ্কানদের হারিয়েই স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিল ভারতীয়রা। এরপর অবশ্য রবিন রাউন্ডের আর জয়ের মুখ দেখেনি তারা। তবে ফাইনালে ঠিকঠাক ঘুরে দাঁড়ান-আজহার-শচীন-সৌরভরা।

৭ জুলাই ১৯৯৮। ফাইনালে শচীন টেন্ডুলকার এবং সৌরভ গাঙ্গুলির ২৫২ রানের রেকর্ড জুটির ওপর দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ভারতের ৩০৭ রানের জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৩০১ রান অবধি তুলতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা। ৬ রানে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

১২৮ রানের রাজসিক ইনিংস খেলে সেদিন ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। আসরজুড়ে ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছড়ানো অরভিন্দ ডি সিলভা হয়েছিলেন সিরিজ সেরা। সিরিজে ৩৬৮ রানের পাশাপাশি একটি উইকেটও শিকার করেছিলেন তিনি।

এ বছর স্বাধীনতার ৭০ বছর পূরণ করেছে শ্রীলঙ্কা। আবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিদাহাস ট্রফি। লঙ্কানদের আমন্ত্রণে ভারত ঠিকই ছিল, কিন্তু নিউজিল্যান্ডের জায়গায় শুধু নিমন্ত্রণ জানানো হয় বাংলাদেশকে।