ব্যাটিং বা বোলিং, যে কোনো এক দক্ষতার বিচারেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডার তো একেই বলে! সাকিবের মতো অলরাউন্ডার আপাতত সারা বিশ্বেই দুর্লভ। এই রকম অলরাউন্ডার হয়ে উঠার পর পারফর্ম করে যাওয়া খেলোয়াড় আরো বেশি দুর্লভ। কিন্তু সাকিবের বেলায় ব্যাপারটা সে রকম নয়। আদতে তিনি যা, পারফর্মার হিসেবও তিনি তাই। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সাকিব কেবলই একজন উপেক্ষিত অলরাউন্ডার।

shakib needs a wicket to make a wonderfull record

চলতি আইপিএলে সাকিবকে দলে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। নিলামে হায়দরাবাদ ছাড়া সাকিবের প্রতি আগ্রহ দেখায় কেবল রাজস্থান রয়্যালস। অন্য কোনো দল তার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। নিলাম থেকে তাকে ‘মাত্র’ দুই কোটি রুপিতে পেয়ে যায় সানরাইজার্স। যাকে মনে করা হচ্ছে নিলামের সবচেয়ে বড় লাভ হিসেবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। আইপিএলের অন্য প্রকৃত অলরাউন্ডাররা হলেন বেন স্টোকস (যার মূল্য ১২ কোটি রুপি), আন্দ্রে রাসেল (সাড়ে আট কোটি রুপি), হার্দিক পান্ডিয়া (১১ কোটি রুপি) ও ক্রুনাল পান্ডিয়া (সাড়ে আট কোটি রুপি)। এরা কেউই চলতি আইপিএলে ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে সাকিবের চেয়ে সেরা নন। অথচ সাকিবের দাম স্টোকস ও হার্দিকের দামের ছয় ভাগের এক ভাগ, রাসেল ও ক্রুনালের দামের চার ভাগের এক ভাগ!

shakib is close to double of 300 t 20 wickets and 3000 runs

হায়দরাবাদের হয়ে মাঝের ওভারগুলোতে মানিষ পান্ডে, ইউসুফ পাঠান ও ঋদ্ধিমান সাহা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না। রশিদ খানও স্বাভাবিকের তুলনায় গুনছেন বেশি রান। এই পরিস্থিতিতে নতুন দলের হয়ে সাকিবের জ্বলে উঠার প্রয়োজন ছিলো এবং তিনি তাই করছেন।

আইপিএলের শুরুর দিকে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ২৩ রানে দুই উইকেট নিয়ে দারুণ শুরু করেন সাকিব। পরে কলকাতার বিপক্ষে ব্যাট হাতে ২৭ রান এবং বল হাতে ২১ রানে দুই উইকেট নিয়ে চমক দেখান তিনি। এরপর ১১৯ রানের পুঁজি নিয়ে মুম্বাইকে ৮৭ রানে আটকে দেয়ার ম্যাচে চার ওভারে ১৬ রান দিয়ে এক উইকেট নেন সাকিব।

এরপর কিংস এলিভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ১৩২ রানের পুঁজির ম্যাচের ১৮ রান দিয়ে সাকিব নেন দুই উইকেট। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যঙ্গালুরুর বিপক্ষে সাকিব দেখান অসাধারণ দক্ষতা। নিখাঁত ব্যাটিং উইকেটে ৩২ বলে ৩৬ রান করার পাশাপাশি দুটি উইকেটও নেন তিনি।

এই সংখ্যাগুলো আলাদা আলাদাভাবে হয়তো খুব বড় কিছু নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন সাকিবের হতে বল তুলে দেয়ার ভরসা পাচ্ছেন পাওয়ার প্লের সময়। সাকিবকে বেশির ভাগ ম্যাচ খেলতে হচ্ছে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে, প্রথাগতভাবে যা কেবলই ব্যাটসম্যানদের স্বর্গরাজ্য ও বোলারদের মৃত্যুকূপ। এই পরিস্থিতিতে সাকিবই প্রতিপক্ষের উপর নিজেদের পেসারদের চাপিয়ে দেয়া চাপটা ধরে রাখছেন এবং রশিদ খানের জন্য উইকেট তুলে নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করছেন।

এবারের আইপিএলে সেরা বোলিং শক্তি নিঃসন্দেহে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং সেটা অবশ্যই সাকিবের কারণে। সাকিব হয়তো খুব বেশি উইকেট পাচ্ছেন না, কিন্তু সানরাইজার্সের দুই বোলার ভুবনেশ্বর কুমার ও রশিদ খানের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছেন তিনিই। এ ছাড়া বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে সাকিব যে অভিজ্ঞাতয় ঋদ্ধ, তাও কাজে লাগছে কেন উইলিয়ামসন ও ভারতের তরুণ বোলারদের।

একজন বোলারের রান আটকে রাখতে পারা যে কোনো ব্যাটসম্যানকে ভুল করতে বাধ্য করে। কিন্তু সাকিব শুধু সেটাই করছেন না, পাওয়ার প্লেতে উইকেট তুলে নিয়ে সানরাইজার্সের বোলিং আক্রমণকে মৌসুমের সেরা হিসেব প্রমাণও করছেন।

দিল্লির বিপক্ষে পরপর দুই বলে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে সাকিব দেখিয়েছেন নিজের গুরুত্ব কতোটা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে রানের জন্য ছুটতে থাকা পার্থিব প্যাটেলকেও ফিরিয়েছেন তিনি। সাকিব এখন পর্যন্ত যে ১২টি উইকেট পেয়েছেন, তার চারটিই এসেছে পাওয়ার প্লেতে। এ সময়ে তার ইকোনমি রেট ৭.৮ আর ডট-বলের হার ৪১.৬৬। প্রথম ছয় ওভারে সাকিব যতো ওভার বোলিং করেছেন, তাতে প্রতি পাঁচ বলে তিনি বাউন্ডারি দিয়েছেন মাত্র একটি করে।

পরিসংখ্যান বলবে যে, স্টোকস-ক্রুনাল-হার্দিক ও আন্দ্রে রাসেলরা সাকিবের চেয়ে বেশি রান করেছেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনের সময় সাকিবের মতো খাপ খাইয়ে নেয়ার কাজটা তারা করতে পারেননি। অন্য দলগুলো যখন অলরাউন্ডারদের কাছ থেকে ম্যাচ জেতানো পারফর্ম আশা করছে, সানরাইজার্স তখন ভরসা রাখছে সাকিবের কাঁধে; না ম্যাচ জেতানোর জন্য নয়, বরং পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য।

প্রতিপক্ষ, কন্ডিশন ও ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারার যে দক্ষতা, তা দেখিয়ে সাকিব হয়ে উঠেছেন সানরাইজার্সের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শুধুই কি সানরাইজার্সের? না, সাকিব বরং হয়ে উঠেছেন পুরো আইপিএলেরই এক গুরুত্বপূর্ণ এবং দুর্লভ অংশ।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.