ফের রশিদের ভেলকি, ১৩৪ রানে গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ

তবে কি এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হেরে যাবে বাংলাদেশ? আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ১৩৪ রানের পুঁজি পেয়েছেন সাকিব আল হাসানরা। এই পুঁজি নিয়ে কি সিরিজ বাঁচানো সম্ভব? মঙ্গলবার রাতের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। প্রথম ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত।

এই ম্যাচ জিততে হলে ১৩৫ রান করতে হবে আফগানিস্তানকে। প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ৮.৩৫ গড়ে রান তুলে তারা। সে হিসেবে মঙ্গলবারের ম্যাচটা তাদের সহজেই জেতার কথা। এই ম্যাচে সফল হয়ে গেলে জিম্বাবুয়ের পর প্রথম কোনো টেস্টখেলুড়ে দেশের বিপক্ষে কোনো সিরিজ জেতার কীর্তি গড়বেন আসগর স্টানিকজাঈরা। আর আফগানিস্তান যদি ব্যর্থ হয়, তবে সিরিজে টিকে যাবে বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচের প্রথম বলে উইকেট হারালেও, এই ম্যাচে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে প্রথম ক্ষতি হয় বাংলাদেশের। শাপুর জাদরানের বলে বিদায় নেন লিটন দাস। কিন্তু এবার আর গত ম্যাচের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েননি তামিম ইকবালরা। তবে দুর্দান্ত কিছুও করতে পারেননি তারা।

দ্বিতীয় উইকেটে উপরে উঠে আসা সাব্বির রহমানকে নিয়ে ২৯ রানের জুটি গড়েন তামিম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ তিন বলে শাপুর জাদরানকে টানা তিন চার মেরে অসাধারণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু নয় বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

তৃতীয় উইকেটে ৪৫ রান করেন তামিম ও মুশফিকুর রহিম। দলীয় ৭৫ রানে মোহাম্মদ নবিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট। ১৮ রান পর ছয় মেরে ইনিংস শুরু করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যান এবং করিম জানাতের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন।

একদিক দিয়ে একের পর এক উইকেট চলে গেলেও অপরপ্রান্তে অবিচল ছিলেন তামিম। কিন্তু তার ব্যাটে প্রত্যাশিত ঝড়ের কিছুই দেখা যায়নি। বরং বাংলাদেশের প্রধান অপেনার যেনো ব্যস্ত ছিলেন নিজের উইকেট বাঁচাতে। এভাবেই ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয় চার উইকেটে ১০১ রান। হাতে ছয় উইকেট নিয়ে শেষ পাঁচ ওভারের ঝড়ের প্রত্যাশা করতে না করতেই ১৬তম ওভারে রশিদ খান আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেন।

এই ওভারে মাত্র দুই রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। প্রথম বলে রাউন্ড দ্য উইকেটে ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। দুই বল পর রশিদকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ঠিক পরের বলে গুগলিতে এলবিডব্লিউ হন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। একটুর জন্য হ্যাটট্রিক পাননি রশিদ। ওভারের শেষ বলটিতে কোনো মতে টিকে যান আবু হায়দার রনি।

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রান ১৩৪-এ যায় আবু হায়দারের ১৪ বলে ২১ রানের কল্যাণে। দুটি ছয় মারেন তিনি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। তিনি করেন ৪৩ রান। মুশফিক করেন ২২ রান। আফগানিস্তানের হয়ে চার ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে চার উইকেট নেন রশিদ খান। এর মধ্যে তিনি তিন উইকেট নেন এক ওভারেই। দুটি উইকেট নেন মোহাম্মদ নবি। 

এই ম্যাচটা বাংলাদেশ খেলতে নামে দুটি পরিবর্তন নিয়ে। আগের ম্যাচের হারের ‘দুই কারণ’ আবুল হাসান রাজু ও আবু জায়েদ রাহি এই ম্যাচে সুযোগ পাননি। তাদের বদলে একাদশে আসেন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। দুই পরিবর্তন নিয়ে নামলেও এই ম্যাচে বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন কি আশা করা যাচ্ছে?