সাকিব-তামিমের পর দুর্দান্ত মাশরাফি, বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

ওয়ানডেতে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী- সেটা আরেকবার প্রমাণ করে দেখালো মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ। জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে অলাআউট হতে হয়েছে ৪৩ রানে। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে হতশ্রী দশা চললেও ওয়ানডেতে নিজেদের সামর্থ্য ভালোভাবেই প্রমাণ করলো বাংলাদেশ।

রোববার উইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৪৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। এনিয়ে সব ফরম্যাট মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ হারার পর জিতলো বাংলাদেশ। আর ওয়ানডেতে জয় এলো ছয় মাস পর। মাশরাফি বিন মর্তুজার দল ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলই ছয় মাস পর।

ছয় পাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমেই বাংলাদেশ জিতলো দলের পাঁচ স্তম্ভের তিনজন তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মর্তুজার কাঁধে ভর করে। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু শুরুটা হলো একেবারেই বাজে। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে আউট এনামুল হক বিজয়। বাংলাদেশের রান তখন ১! আবারও টেস্টে ধস উঁকি দিচ্ছিল তখন অনেকের মনে।

কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান ২০৭ রানের জুটি গড়ে বুঝিয়ে দিলেন তাদের কাছে টেস্টে, টি-টোয়েন্টির চেয়ে ওয়ানডেটা আলাদা জিনিস। উইন্ডিজের বিপক্ষে যেকোনো উইকেটেই বাংলাদেশের এটা সেরা জুটি। এর আগে মাত্র একবার দুইশ রানের জুটি পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব-তামিমের রেকর্ড জুটির পর পাঁচে নেমে ১১ বলে ৩০ করলেন মুশফিকুর রহিম। সব মিলিয়ে নির্ধারিত ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ সাত উইকেটে ২৭৯।

তামিম ইকবাল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। ১৬০ বল খেলে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই টাইগার ওপেনার। সাকিব সেঞ্চুরি মিস করেছেন মাত্র তিন রানের জন্য। ১২১ বলে ৬ চারে ৯৭ রান করেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।

এরপরের নায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। টেস্টে খেলছেন না অনেকদিন যাবৎ। ‘বোর্ডের চাপে’ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর নিতে হয়েছে। মাশরাফি কাল ওই ছয় মাস পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমেছিলেন। কিন্তু বোলিং দেখে সেটা মনে হলো কই! শুরু থেকেই ক্রিস গেইল, এভিন লুইসের মতো মারকাটারি ব্যাটসম্যানকে দেখা গেল মাশরাফির বিপক্ষে হাঁসফাঁস করছেন।

দলীয় ২৭ রানের মাথায় লুইসকে মাহমুদুল্লাহর ক্যাচ বানিয়ে শুরু করেছিলেন মাশরাফি। পরে আরো ৩ উইকেট নিয়েছেন। দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোসাদ্দেক হোসেনরাও। মাশরাফি ১০ ওভার বোলিং করে ১ মেডেনে ৩৭ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ৮ ওভারে ৩৫ রান খরচায় দখল করেছেন ২ উইকেট। মিরাজ ৩৭ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ১ উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে শেষ পর্যন্ত ২৩১ রান তুলতে পেরেছে। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা অনুমিতভাবে তামিম ইকবালের হাতেই উঠেছে।