ব্যাটিং নিয়ে নতুন করে ভাবছেন লিটন

ঘরোয়া ক্রিকেটে লিটন দাসের মাঠে নামা মানেই রানের বন্যা বয়ে যাওয়া। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের ব্যাটিংয়ের সেই দ্যুতি এখনো দেখাতে পারেননি তিনি। একদমই যে পারেননি, তা অবশ্য নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ৩২ বলে অনবদ্য ৬১ রান করেন তিনি। যা ছিলো তার ব্যাটিং সক্ষমতার ছোট এক উদাহরণ। কিন্তু তিনি এমন ব্যাটিং নিয়মিত করতে পারছেন না কেনো?

এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২টি সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলেছেন লিটন দাস। এতে তার হাফ সেঞ্চুরি মাত্র একটি! এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যদি হন ঝলমলে তারা, তাহলে আন্তর্জাতিকে তিনি ক্রমশ ম্লান হতে থাকা নিভু নিভু কুপির আলো।

কদিন বাদে এশিয়া জয় করার মিশনে আরব আমিরাত যাবে বাংলাদেশ। তার আগে বুধবার সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন লিটন দাস। এ সময় নিজের ব্যাটিং নিয়ে নতুন চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানালেন তিনি।

বড় রান কেনো আসছে না, কেনো তিনি দারুণ শুরুর পরই ধসে পড়ছেন হঠাৎ করে; এমন একটি প্রশ্নে সংবাদ মাধ্যমকে লিটন দাস বলেন, ‘যারা বড় বড় ক্রিকেটার তাঁরা ভালো শুরু করতে পারলে ইনিংস লম্বা করে। এখনও বড়দের কাতারে যেতে পারিনি তো তাই এখন বড় ইনিংস হচ্ছে না। আমি চেষ্টা করছি ভালো কিছু করার যেন বড় কিছু করতে পারি।’

এমন উত্তরে লিটন দাসের কণ্ঠে যেনো ফোটে উঠে কিছুটা বিরক্তি। কিন্তু ঠিক কী কারণে তার ইনিংস বড় হচ্ছে না; তাকে পড়তে হয় এমন প্রশ্নের মুখেও। এবার কিছুটা চিন্তিত লিটন, ‘আসলে আউট হতে হলে একটি বলই তো প্রয়োজন। সেটি নিয়েই আসলে কাজ করছি; চেষ্টা করছি কোন শটগুলো শতভাগ নিখুঁত করা যায়। বড় ব্যাপার হলো, আপনাকে শুধু উইকেটে থাকলে তো হবে, রানও করতে হবে। আর রান করতে হলে উইকেটে টিকে থাকলেই হবে না, ব্যাটও চালাতে হবে। সেই বিষয়গুলোই এখন বিবেচনা করছি। চেষ্টা করছি নিজেকে পরের ধাপে নিয়ে যাওয়ার।’

লিস্ট-এ ক্রিকেটে লিটন দাসের গড় ৪০-এর উপরে। সেই তিনিই ১০ ওয়ানডে খেলে সর্বোচ্চ করতে পেরেছেন মাত্র ৩৬ রান। গড় মাত্র ১৫! ঘরোয়া ক্রিকেটের লিটনে সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের লিটনের সাথে ব্যবধান এতোটাই প্রকট।

এশিয়া কাপে অবশ্য নিজের এই রূপটা বদলে ফেলার দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন লিটন। এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে তিনি খেলবেন তামিম ইকবালের ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে। যেখানে দারুণ কিছু করার সুযোগ থাকবে তার সামনে। লিটন যদি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে ওয়ানডে দলে তার জায়গা পাকা করা নিয়ে আর ভাবতে হবে না। আর যদি না পারেন? তাহলে আর কী- ফের চলে যেতে হবে ওয়ানডে দলের বাইরে! লিটন নিশ্চয় তা চাইছেন না। এবার তার নেই ‘না-চাওয়াটা’ প্রমাণ করতে হবে মাঠের ক্রিকেটে।