ইমরুল-লিটনের ব্যাটে বাংলাদেশের অনায়াস জয়

দুই বছর চট্টগ্রামের মাটিতে ওয়ানডে খেলতে নেমেই সহজ এক জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ। যা এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজও নিশ্চিত করে দিলো। ঢাকায় ২৮ রানে প্রথম ম্যাচ জেতার পর চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতলো সাত উইকেটে। শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২৬ অক্টোবর।

এই ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। হেমন্তের এই সময়ে সন্ধ্যা নামার আগেই পড়তে থাকে শিশির। ফলে স্পিনারদের বল গ্রিপ করতে সমস্যা হয়। এ কারণে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে একদমই ভাবেননি মাশরাফি।

আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ২৪৬ রান করে জিম্বাবুয়ে। তাদের ওপেনাররা ভালো শুরু এনে দিলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারেননি। ফলে আরো বেশি রান হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ২৪৬ রানেই থামে সফরকারিরা।

হাফ সেঞ্চুরি করেন ব্রেন্ডন টেলর। ৪৯ রান করেন এই সিকান্দার রাজা। এ দুজন ছাড়া আর কোনো জিম্বাবুয়ান ব্যাটসম্যান বলার মতো কিছু করতে পারেননি। ২৪৬ রানও অবশ্য অনায়াসে স্পর্শযোগ্য পুঁজি নয়। কারণ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এর চেয়ে বেশি রান চেজ করে জেতার রেকর্ড মাত্র একটি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ২৭৭ রান চেজ করে জিতেছিলো ইংল্যান্ড। সে হিসেবে বেশি রান তাড়া করে জেতার হিসেবে এই মাঠের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডটাই গড়ে দিলো বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে আলো ছড়ান সাইফুদ্দিন। তিন উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তিনি। প্রথম ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির পর এবার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, সাইফুদ্দিন যে সত্যিকারের পেস বোলিং অলরাউন্ডার হওয়ার পথে এগোচ্ছেন, এটা নিশ্চয় না বললেও হয়। আগামী বছরের বিশ্বকাপে সাইফুদ্দিন হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের বাজির ঘোড়া।

২৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে ওপেনিংয়ে ১৪৮ রানের জুটি গড়েন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। যা সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম ওপেনিং জুটি এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় বৃহত্তম। এই জুটি গড়ার পথে হাফ সেঞ্চুরি উভয় ওপেনার। লিটন ৮৩ রান করে আউট হন আর ইমরুল করেন ৯০ রান। বাঁহাতি ওপেনার এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু ৯০ রানে দাঁড়িয়ে অহেতুক শট খেলতে গিয়ে তিনি বল তুলে দিন সোজা ফিল্ডারের হাতে।

ইমরুল যখন আউট হন, তখনও বাংলাদেশের দরকার ছিলো ৩৬ রান। এই রানটা করে দলকে ম্যাচ ও সিরিজ জেতাতে মোটেও ভুল করেননি মুশফিক ও মোহাম্মদ মিঠুন। মুশফিক শেষ পর্যন্ত ৪০ রানে এবং ২৪ রানে মিঠুন অপরাজিত থাকেন। ৪৫তম ওভারে প্রথম বলে ছয় মেরে জয় নিশ্চিত করেন মিঠুন।

ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে মুশফিক বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূরণ করেন। ১০ হাজার রান করার পথে মুশফিক সেঞ্চুরি করেছেন ১১টি এবং হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৫৩টি। তার ১০ হাজার রান করার দিনে দলের ম্যাচ ও সিরিজ জয়; মুশফিকের দিনটি নিশ্চয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।