বিপিএল দল পর্যালোচনা: ঢাকা ডায়নামাইটস

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট। এই আয়োজন থেকে আসরের সাত দল তাদের স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। প্লেয়ার ড্রাফটের আগে গত আসরের দল থেকে চারজন করে খেলোয়াড় রেখে দেয়ার সুযোগ পেয়েছে প্রতিটি দল। এ ছাড়া দুজন করে বিদেশি ক্রিকেটারকেও সরাসরি কেনার সুযোগ পেয়েছে দলগুলো।

রেখে দেয়া ক্রিকেটার, সরাসরি চুক্তি ও প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে নেয়া খেলোয়াড়; এভাবেই স্কোয়াড গুছিয়েছে প্রতিটি দল। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের আসরের জন্য গড়া দলগুলো কেমন হয়েছে, তা নিয়ে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের ধারাবাহিক আয়োজনের এই পর্বে থাকছে ঢাকা ডায়নামাইটসের কথা।

বিপিএলের বর্তমান রানার্সআপ ঢাকা ডায়নামাইটস তাদের দল সাজিয়েছে মূলত বিদেশিদের উপর নির্ভর করে। সাথে থাকছেন দেশীয় কয়েকজন তারকাও। ঢাকা ডায়নামাইটসের এই বিপিএল সাফল্য-ব্যর্থতার অনেকখানি নির্ভর করবে তাদের রেখে দেয় চার ক্রিকেটার- সাকিব আল হাসান, সুনিল নারিন, রভম্যান পাওয়েল ও কাইরন পোলার্ডের উপর।

ঢাকা ডায়নামাইটস তাদের স্কোয়াডে মোট সাতজন বিদেশিকে ভিড়িয়েছে। রেখে দেয়া তিনজন বাদে বাকি চারজন হলেন আফগানিস্তানের হযরতুল্লাহ জাযাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল, দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু বির্চ ও ইংল্যান্ডের ইয়ান বেল। এদের মধ্যে হযরতুল্লাহ ও আন্দ্রে রাসেলের সাথে সরাসরি চুক্তি করেছে ঢাকা ডায়নামাইটস।

ঢাকাদের বিদেশিদের মধ্যে যে কজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আছেন, তারা সবাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পৃথিবীর সেরা পারফর্মারদের দলে। এদের বেশির ভাগই ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। আফগানিস্তানের তরুণ খেলোয়াড় হযরতুল্লাহ জাযাই আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী আসরে খেলেছেন অসাধারণ। এক ম্যাচে মাত্র ৫৫ বলে ১২৪ রান করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এদের সঙ্গে থাকছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ান বেল ও দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু বির্চ। বেল তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অসাধারণ সব কীর্তি গড়লেও ফ্রেঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টিতে তিনি প্রায় অচেনা নাম। ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের বাজারও তেমন নেই। তারপরও ঠিক কী কারণে তাকে ঢাকা দলে ভিড়িয়েছে, তা এক বিস্ময়। খুব সম্ভবত মেন্টর ও ক্রিকেটারের দ্বৈত ভূমিকা পালন করবেন তিনি। অন্য দিকে অ্যান্ড্রু বির্চও অচেনা নাম। ৩৩ বছর বয়সী এই বোলারের ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ার যথেষ্ট সমৃদ্ধ হলেও কখনো প্রোটিয়া মূল দলে তার জায়গা হয়নি।

ঢাকার দেশীয় শক্তিও কম নয়। যেখানে এক নম্বরে আছেন সাকিব আল হাসান। ইনজুরি থেকে সেরে উঠার যুদ্ধে থাকা সাকিব খুব সম্ভবত বিপিএলের আগেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার সাথে আরো আছেন রুবেল হোসেন, কাজী নুরুল হাসান সোহান, রনি তালুকদার, শুভাগত হোম, কাজী অনিক, মিজানুর রহমান, আসিফ হাসান, শাহাদাত হোসেন রাজীব ও নাঈম শেখ।

এদের মধ্যে এদের মধ্যে রুবেল হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান জাতীয় দলের ক্রিকেটার। জাতীয় দলে দীর্ঘদিন খেলেছেন শাহাদাত হোসেন রাজীবও। এ ছাড়া শুভাগত হোম, রনি তালুকদারও মাড়িয়েছেন জাতীয় দলের চৌকাঠ। প্রত্যেকেই পরীক্ষিত ক্রিকেটার। বাকি যারা আছেন, তারাও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট বা বিপিএলে দারুণ খেলে নজর কেড়েছেন। সব মিলিয়ে ঢাকার দেশীয় শক্তিও অসামান্য। যে শক্তিতে মূল চমক হয়ে উঠতে পারেন কাজী অনিক। বাঁহাতি এই তরুণ পেসার গত বিপিএলেও দেখিয়েছেন তার ঝলক। এবার তিনি হয়ে উঠেছেন আরো পরিণত। দেশি ও বিদেশিদের সমন্বয়ে ঢাকা শেষ পর্যন্ত যে দল দাঁড় করিয়েছে, এবারের বিপিএলের শিরোপা ঘরে তুলার যথেষ্ট যোগ্যতা আছে তাদের।

দেশি ক্রিকেটার: সাকিব আল হাসান, রুবেল হোসেন, কাজী নুরুল হাসান সোহান, রনি তালুকদার, শুভাগত হোম, কাজী অনিক, মিজানুর রহমান, আসিফ হাসান, শাহাদাত হোসেন রাজীব ও নাঈম শেখ।

বিদেশি ক্রিকেটার: সুনিল নারিন, রভম্যান পাওয়েল, কাইরন পোলার্ড, হযরতুল্লাহ জাযাই, আন্দ্রে রাসেল, অ্যান্ড্রু বির্চ ও ইয়ান বেল।