বিপিএল দল পর্যালোচনা: চিটাগং ভাইকিংস

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট। এই আয়োজন থেকে আসরের সাত দল তাদের স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। প্লেয়ার ড্রাফটের আগে গত আসরের দল থেকে চারজন করে খেলোয়াড় রেখে দেয়ার সুযোগ পেয়েছে প্রতিটি দল। এ ছাড়া দুজন করে বিদেশি ক্রিকেটারকেও সরাসরি কেনার সুযোগ পেয়েছে দলগুলো।

রেখে দেয়া ক্রিকেটার, সরাসরি চুক্তি ও প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে নেয়া খেলোয়াড়; এভাবেই স্কোয়াড গুছিয়েছে প্রতিটি দল। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের আসরের জন্য গড়া দলগুলো কেমন হয়েছে, তা নিয়ে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের ধারাবাহিক আয়োজনের এই পর্বে থাকছে চিটাগং ভাইকিংসের কথা।

বিপিএলের সর্বশেষ আসরে সবচেয়ে ব্যর্থ দল ছিলো চিটাগং ভাইকিংস। আসরের ১২ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটি ম্যাচ জিতেছিলো তারা। ওই রকম ব্যর্থতার পর দলটির মালিকপক্ষ আর বিপিএলে অংশগ্রহণ না করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কিন্তু শেষমেষ তারা তাদের সিদ্ধান্ত বদলে আবার এ বছর আবার বিপিএলে অংশগ্রহণ করবে। এবার যে দলটি সাফল্যের জন্য মরিয়া, তা বোঝা গেছে তাদের দল গঠন দেখেই।

গত আসরের দল থেকে লুক রনকি, সিকান্দার রাজা ও সানজামুল ইসলামকে রেখে দিয়েছে তারা। এ তিনজন গত আসরে চিটাগংয়ের হয়ে সবচেয়ে ধারাবাহিক ছিলেন। বিশেষ করে জিম্বাবুয়ান অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা দলটিকে টেনেছেন তার সর্বোচ্চ দক্ষতা দিয়ে। রনকি ও সানজামুলও ছিলেন অসাধারণ। এদের সঙ্গে যোগ এ প্লাস ক্যাটাগরির খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক গত বিপিএল খেলেছেন রাজশাহী কিংসের হয়ে। তাকে পেয়ে চিটাগং ভাইকিংস স্বপ্ন দেখছে নতুন কিছুর। এ ছাড়া নিজেদের স্বপ্নে রঙ বাড়াতে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদ ও ২৭ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ককে দলভুক্ত করেছে তারা।

মোহাম্মদ শাহজাদ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সব সময়ই দারুণ আকর্ষণীয় ব্যাটসম্যান। অন্য দিকে রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক বাংলাদেশের ক্রিকেটে একজন অচেনা নাম। বিপিএলে নাম লেখানোর আগে আইপিএল ও সিপিএল খেলেছেন তিনি। আইপিএলে তার দল ছিলো দিল্লি ডেয়ারডেভিলস আর সিপিএলে রবার্ট খেলেছেন ত্রিনবাগো নাইটরাইডার্সের হয়ে।

এই চারজন বাদে প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে আরো ১২ জনকে দলে নিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। তাদের মধ্যে বিদেশি আছেন তিনজন- নাজিবুল্লাহ জাদরান, ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও দাসুন সানাকা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই তিনজনই নিজেদের কার্যকরিতা নানা সময়ে প্রমাণ করেছেন।

এদের সঙ্গে নয়জন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস, তারা হলেন- মোসাদ্দেক হোসেন, আবু জায়েদ রাহী, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নাঈম হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল, রবিউল হক, ইয়াসির আলি চৌধুরী, নিহাদ-উহ-জামান ও সাদমান ইসলাম। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আশরাফুলের নামটা নিশ্চয় চমক জাগানিয়া।

বিপিএলের ষষ্ঠ আসর দিয়েই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফ্রেঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটে ফিরছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ২০১৩ সালের বিপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়ে যান তিনি। পাঁচ বছরের সেই নিষেধাজ্ঞা কেটে গেছে গত আগস্ট মাসে এবং এর মাধ্যমে সব ধরনের ক্রিকেটে ফেরার রাস্তা খুলে গেছে আশরাফুলের সামনে।

অন্য দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে মোসাদ্দেক হোসেন, সাদমান ইসলাম, আবু জায়েদ, নাঈম হাসান ও সৈয়দ খালেদ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করেছেন এবং ভালো কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছেন। বিশেষ করে তরুণ অফস্পিনার নাঈম হাসান হয়ে উঠতে পারেন চিটাগংয়ের তুরুপের তাস।

চিটাগংয়ের দেশি সংগ্রহ: মুশফিকুর রহিম, সানজামুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু জায়েদ রাহী, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নাঈম হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল, রবিউল হক, ইয়াসির আলি, নিহাদুজ্জামান ও সাদমান ইসলাম।

বিদেশি সংগ্রহ: লুক রনকি, সিকান্দার রাজা, মোহাম্মদ শাহজাদ, রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক, নাজিবুল্লাহ জাদরান, ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও দাসুন সানাকা।

এ সংক্রান্ত আরো লেখা পড়তে পারেন:

বিপিএল দল পর্যালোচনা: ঢাকা ডায়নামাইটস