প্রথম ইনিংসে মাশরাফিদের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ

বোলারদের লড়াই করার মতো আদর্শ এক পুঁজি এনে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে ২৫৫ রানের শক্তিশালী সংগ্রহ তুলেছে বাংলাদেশ। তামিম-সাকিবরা সিরিজ জয়ের অর্ধেক কাজটা সেরেছেন। কাজ বাকি থাকল বোলারদের।

প্রথম ওয়ানডের মতো এদিনও চার ওপেনার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ওপেনারদের মধ্যে আগের ম্যাচে উল্লেখযোগ্য রান করেছিলেন লিটন দাশ। ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ ছিলেন বাকি তিন ওপেনার। আজও একই দৃশ্যের পুনর্মঞ্চায়ন হলো। এবার লিটন নয়, জ্বলে উঠলেন তামিম।

মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ের ভাগ্যটাও সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনুকূলে গেছে। এবার আগে ব্যাটিং নয়, সতীর্থ পেসার কেমার রোচের হাতে বল তুলে দিয়েছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। গ্যালারি তখনো ভরে ওঠেনি, এমন সময়ই সমর্থকদের বুক কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ওশান থমাস।

দ্বিতীয় ওভারেই ক্যারিবীয় পেসার দুর্দান্ত একটা ইয়র্কারে আঘান হানেন লিটন দাশের বাঁ পায়ে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন লিটন। স্টেডিয়াম থেকে সোজা হাসপাতালে যেতে হয় ডানহাতি ওপেনারকে। শুরুর এই ধাক্কাটা সামলে ওঠার আগেই নতুন ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস সাজঘরে ফিরে গেলেন। ঘাতক সেই থমাস।

ছয় বল খরচ করেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনে নামা ইমরুল। পরে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠেন তামিম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১১১ রান করেন দুজন। টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের ভিতটা গড়ে দিয়েছে এই জুটিই। জুটি ভাঙে তামিম ৫০ রানে বিদায় নিলে।

৬৩ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ইনিংসটা সাজান তামিম। সঙ্গী হারানো মুশফিকও ফিরে গেলেন খানিক বাদে। ৮০ বলে পাঁচটি চারের সুবাদে ৬২ রানে আউট হয়েছেন মুশফিক। তার শিকারী সেই থমাসই। ততক্ষণে উইকেটে জমে গেছেন সাকিব আল হাসান। বেধড়ক পেটালেন তিনি ক্যারিবীয় বোলারদের।

সাকিব যতটা আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছিলেন ততটাই শান্ত। এ দুজন মিলে করেন ৬১ রান। জুটি বিচ্ছিন্ন করেন পাওয়েল। তার বলে হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৫১ বলে তিন চারের সাহায্যে ৩০ রান করেছেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান।

সাতে নামা সৌম্য সরকার এদিনও ব্যাট হাতে হতাশ করেছেন দর্শকদের। আট বলে ছয় রানে আউট হয়েছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে চলে আসা লিটন দাশ বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। এবার মাত্র তিন রান করেছেন তিনি। সাজঘরে লিটন যখন ফিরছিলেন তখন তার নামের পাশে ছিল ১৪ বলে ৮ রান।

হঠাৎই পথহারা বাংলাদেশকে কক্ষপথে রাখার চেষ্টা করছিলেন সাকিব। এক প্রান্ত আগলে রেখে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ৪০তম অর্ধশতক। ইনিংসটা আরো লম্বা করার আভাস দিয়েছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু সাকিব ফিরেছেন ৬৫ রানে। ৬২ বলের ঝোড়ো ইনিংসে ছয়টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

সাকিব আউট হওয়ায় প্রত্যাশিত সংগ্রহটা পায়নি বাংলাদেশ। লোয়ার অর্ডারে নামা মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং মেহেদি হাসান মিরাজ স্লগ ওভারে খুব একটা রান তুলতে পারেননি। ১১ বলে ছয় রানে অজেয় ছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক। ১০ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ।

বাংলাদেশের পতন হওয়া সাত উইকেটের তিনটি নিয়েছেন থমাস। রোচ, পল, বিষ্ণু, পাওয়েলের শিকার একটি করে।