ইতিহাসের করুণতম লজ্জায় বাংলাদেশের ফুটবল

গত অক্টোবরের পর থেকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপের প্লে-অফে ভুটানের কাছে হেরে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অনেকটা নির্বাসিত বাংলাদেশ ফুটবল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই অনুপস্থিতর জন্য এখন বড় মূল্য দিতে হচ্ছে লাল-সবুজের দলকে। সর্বশেষ প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৯৭ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। কোথায় হারিয়ে গেলো বাংলাদেশের ফুটবলের দাপট- পুরোনো প্রশ্নটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো আবার। 

যেটা সর্বনিম্ন র‌্যাঙ্কিংয়ের ইতিহাস, অতীতে কখনোই র‌্যাঙ্কিংয়ের এতোটা নিচে নামেনি বাংলাদেশ। একটা সময় প্রতিবেশি দেশ ভারত র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের কাছাকাছি অবস্থানে থাকত। কিন্তু এখন র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারত তড়তড় করে এগুচ্ছে আর বাংলাদেশ নামতে নামতে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে। ১৯৯৬ সালে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১০ নম্বর অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। সে কালের ফুটবল পাগল দেশটা এখন কিনা র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৯৭ নম্বরে!

ফিফার র‌্যাঙ্কিংয়ে সর্বশেষ চার বছরের ফলাফল বিচার করা হয়। এতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় সর্বশেষ এক বছরের ফলাফল। বাংলাদেশ গত এক বছরে কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলতে পারেনি। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে ভুটানের কাছে হেরে যাওয়াতে তিন বছর ফিফা এবং এএফসি স্বীকৃত কোন ম্যাচ পাবে না বাংলাদেশ। তবে সাফ ফুটবল, এসএ গেমস খেলতে পারবে। যেগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তাছাড়া বাফুফে চাইলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারত।

কিন্তু কোনটিই হয়নি। সাফ ফুটবল বা এসএ গেমসের সময়ই আসেনি। আবার বাফুফের বর্তমান যে বেহাল অবস্থা এখন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা চিন্তাও হয়তো করেনি বাফুফের অনেক কর্মকর্তা! আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলা হয়নি বাংলাদেশের। র‌্যাঙ্কিংয়ের এতোটা পিছিয়ে যাওয়া এই কারণেই।

অবশ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে র‌্যাঙ্কিং পেছাতো না সেটা বলার লোকও খুঁজে পাওয়া দায়। কয়েক বছর ধরেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশ ফুটবল। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে এবং সেগুলোতে একটা, দুইটা জয় এলে র‌্যাঙ্কিংয়ে এখনই এতোটা পতন নাও হতে পারত।

সর্বশেষ প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের নিচে আছে শুধু শ্রীলঙ্কা (২০০) ও পাকিস্তান (২০১)। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশও যে ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে যথারীতি জার্মানি। তার পরে নেইমারের ব্রাজিল।