অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর কোনোরকম আয়োজন করা হয় প্রথম বিশ্বকাপ। ওই আসরের রেশ থেকে যায় ১৯৩৪ বিশ্বকাপেও। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পর প্রথমবার বিশ্বকাপের আসর বসে ইউরোপের মাটিতে। দ্বিতীয় বিশ্বকাপের আয়োজক ইতালি। ঘরের মাঠে কলঙ্কিত সেই বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয় পিরলো-বুফনদের দেশ।

fifa world cup 1934

ইতালির শ্রেষ্ঠত্ব ছাপিয়ে১৯৩৪ সালে বারবার আলোচনায় কেন্দ্রে উঠে এসে বিতর্ক। যে কটি বিশ্বকাপ নানা বিতর্কের কারণে ইতিহাসে কুখ্যাত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ইতালির এই আয়োজন। যেটার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলো একনায়কতন্ত্র, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি। বিশ্বজুড়ে ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া ছড়িয়ে পড়ে ওই বিশ্বকাপের সময়। 

এই ফ্যাসিবাদের জনক বেনিতো মুসোলিনি। তিনি ছিলেন তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্বৈরশাসক। ক্ষমতার শীর্ষস্থানের শক্তির জোরে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ আয়োজন করেন তিনি। এ বিশ্বকাপ কারা আয়োজন করবে, তা নির্ধারণের যে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়েছিলো, তা ছিলো স্রেফ লোক দেখানো।

অবশ্য দ্বিতীয় বিশ্বকাপ যে ইউরোপে হবে সেটা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলো। কিন্তু কোন দেশ আয়োজনের সুযোগ পাবে সেটা নিয়েই ছিলো রোমাঞ্চ। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের সেই রোমাঞ্চে জল ঢেলে দেন ইতালির রাষ্ট্রপ্রধান।

অভিযোগ আছে, ওই আসরের সবকটি ম্যাচের রেফারি বাছাই করে দিতো ইতালি সরকার। ফুটবল ইতিহাসে দেখা যায়, ইতালির ম্যাচের আগের দিন রেফারিদের সঙ্গে দেখা করতেন মুসোলিনি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তখনই, যখন ফাইনালের আগের দিন ওইসব রেফারিকে বাসায় ডেকে বিশেষ আপ্যায়ন করানতিনি। শুধু তাই নয়, রেফারিদের উপঢৌকনের ব্যবস্থাও করতেন মুসোলিনি।

ইতালির স্বৈরশাসক প্রতিটি ম্যাচের পুরস্কার বিতরণীতে উপস্তিত হয়ে আরো উসকে দেন বিতর্ক। ইতালির ম্যাচের সময় তো তিনি থাকতেন মূল চরিত্রে। তার চাওয়াতেই বিতর্কিতভাবে প্রথম রাউন্ডেই বাদ দেওয়া হয়েছিল ইউরোপের বাইরের দেশগুলোকে। ইউরোপিয়ান দল ও ইতালির ম্যাচে রেফারিই হয়ে উঠতেন দ্বাদশ খেলোয়াড়!

প্রথম বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিলো ১৩টি দেশ। ইতালিতে এসে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা হয় ১৬। কিন্তু তুলনামূলকভাবে ম্যাচের সংখ্যা বাড়েনি, গোলও বেশি হয়নি। ১৭টি ম্যাচে গোল হয় আগের আসরের সমান ৭০টি। গোল ও ম্যাচ সংখ্যা কম হওয়ার কারণ দ্বিতীয় বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে ছিলো না কোনো রবিন লিগ রাউন্ড পদ্ধতি।

মুসোলিনির নির্দেশেই বিশ্বকাপের আগা-গোড়া পুরোটাই আয়োজন করা হয়েছিল নক আউট পদ্ধতিতে। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ হেরে বিদায় নিয়েছিল আটটি দেশ। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, শেষ আটে উঠা সব দেশই ছিলো ইউরোপের। আগেরবার বিশ্বকাপে ইউরোপের দল ছিলো চারটি। আর ইতালি বিশ্বকাপে ১৬ দলের ১২টিই ছিলো ইউরোপের।

প্রথম বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দল খুঁজে পেতেই কষ্ট হয়েছিল ফিফার। কিন্তু ফুটবলের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে পরেরবারই। দ্বিতীয় বিশ্বকাপে ৩২টি দল অংশ নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখায়। তাই ওই আসরেই প্রথমবার বাছাইপর্বের আয়োজন করে ফিফা। মজার বিষয় হচ্ছে স্বাগতিক ইতালিও বাছাইপর্বে অংশ নেয়।

এতে তাদের উপকারই হয়। যার প্রমাণ দিতে কিনা কে জানে, বিশ্বকাপের চার ম্যাচে ১২ গোল করে বসে স্বাগতিকরা। তবে গোল্ডেন বুট জেতেন চেকোস্লোভাকিয়ার ফরওয়ার্ড ওর্ডরিচ নিজেডলি। তিনি চার ম্যাচে পাঁচ গোল করেন।

প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক উরুগুয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ইউরোপের চারটির বেশি দেশ আনতে পারেনি। প্রতিবাদে ইউরোপের প্রথম বিশ্বকাপ বয়কট করে তারা। ফুটবল ইতিহাসে ওটাই একমাত্র বিশ্বকাপ যেখানে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা অংশ নেয়নি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা অংশ নিলেও সেরা দল পাঠায়নি। অবজ্ঞ করে ইতালিতে দ্বিতীয় সারির দল পাঠায় দক্ষিণ আমেরিকার দুই পরাশক্তি।

ইতালির মঞ্চ দিয়েই আফ্রিকান প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ অভিষেক হয় মিশরের। টুর্নামেন্টে ইউরোপ এবং আমেরিকার বাইরের একমাত্র দলও ছিল তারা। দ্বিতীয় বিশ্বকাপের দলগুলো হলো- ইতালি (স্বাগতিক), আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, বেলজিয়াম, চেকোস্লোভাকিয়া, মিশর, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, সুইডেন, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, ও যুক্তরাষ্ট্র।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.