বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। যার জন্ম ১৯০৪ সালে। সংগঠনটির জন্মদাতা যে সাতটি দেশ তাদের মধ্যে একটি বেলজিয়াম। ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা উয়েফারও সহ-নির্মাতা বেলজিয়ানরা। শুধু সাংগঠনিকভাবেই নয়, মাঠের ফুটবলেও পরাশক্তি তারা। যাদের ছন্ম নাম রেড ডেভিল। তবে বিশ্ব ফুটবল তাদের চিনে থাকে ‘কালো ঘোড়া’ নামে। বিশ্বকাপের সূচনালগ্নের আগে থেকেই যাত্রা শুরু হয়েছিল বেলজিয়ানদের ফুটবল সংস্কৃতি।

belgium football team

১৯৩০ সালে ল্যাটিন আমেরিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ থেকে যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ইউরোপের প্রায় সব দেশ তখন ফিফার মান বাঁচিয়েছিল চারটি দল। এদের মধ্যে একটি দেশ বেলজিয়াম। এই দেশটিই এক সময় নেদারল্যান্ডসের উপনিবেশ ছিল। ডাচ শাসন থেকে বেলজিয়ামের মুক্তি হয় ১৮৩০ সালে। ধীরে ধীরে ইউরোপে বেলজিয়ানরা গড়ে তোলে নতুন সভ্যতা।

প্রতিবেশি দেশ ইতালি, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে ফুটবল খেলা শুরু করে বেলজিয়াম। তাদের সংগঠনের নাম রয়্যাল বেলজিয়ান ফুটবল এসোসিয়েশন। এই সংঘটনের হাত ধরেই শুরু হয় তাদের পথ চলা। বিশ্বকাপের পথচলা শুরুর আগেও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল কালো ঘোড়ারা। ১৯০৪ সালে ইভান্স ট্রফি দিয়েই প্রতিযোগিতার মঞ্চে অভিষেক হয় তাদের। আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেকের পর বেলজিয়ামের সবচেয়ে বড় সাফল্য ১৯৮০ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের রানার্সআপ হওয়াটা।

১৯৩০ সালে ফিফার আমন্ত্রণ পাওয়া বেলজিয়াম শত বাধা পেরিয়ে অংশ নেয় প্রথম বিশ্বকাপে। তবে আসরটা সুখের হয়নি তাদের জন্য। উরুগুয়ে বিশ্বকাপে বেলজিয়ানরা বিদায় নেয় প্রথম রাউন্ডেই। পরের দুই বিশ্বকাপেও একই দুর্ভাগ্য বরণ করতে হয় তাদের। ১৯৫০ সালে বাছাইপর্বে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয় রেড ডেভিলরা। চার বছর পর ফেরার বিশ্বকাপটাও রাঙাতে পারেনি তারা।

দেশটির ফুটবলে বিপর্যয় নেমে আসে এরপরই। টানা তিনটি বিশ্বকাপে মূল পর্বের টিকিট পেতে ব্যর্থ হয় বেলজিয়ানরা। ১৯৭০ ও ১৯৭৮ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলেও প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি আর পাড়ি দেওয়া হয়নি তাদের। ১৯৮২ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে বেলজিয়াম। বেলজিয়ানদের ফুটবল তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য পায় পরেরবারই। সবাইকে চমকে দিয়ে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে যায় তারা।

কিন্তু সাফল্যটা ধরে রাখতে পারেনি রেড ডেভিলরা। ছিয়াশির পর সাতটি বিশ্বকাপ খেলে একবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল তারা। দুই বিশ্বকাপ বিরতি দিয়ে ২০১৪ সালে বেলজিয়ামের ফেরাটা ছিল আশা জাগানিয়া। দেশটির ইতিহাসে সেরা দল নিয়ে ব্রাজিলে গিয়েছিল তারা। সোনালি প্রজন্মের ওপর ভর দিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফিরও স্বপ্ন দেখেছিল বেলজিয়াম। কিন্তু সুন্দর সমাপ্তি করতে পারেনি তারা। গত বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভারসম্যপূর্ণ দলটার স্বপ্নযাত্রা থেমে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে, লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।

তবে তাতে থেমে যায়নি বেলজিয়ামের ফুটবল। ওই ভিতটার ওপর দাঁড়িয়ে অনেকদূর ঠিকই এগিয়েছে তারা। ২০১৬ সালে হ্যাজার্ড-লুকাকু-কোম্পানিরা প্রথমবারের মতো ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠার গৌরব এনে দিয়েছিলেন দেশকে। এই বেলজিয়াম অতীতের যে কোনো দলের চেয়ে অধিক শক্তিশালী এবং ভয়ঙ্কর। ইউরোপের মাটিতে এবারের বিশ্বকাপ হওয়ায়, সম্ভাব্য শিরোপাজয়ীদের তালিকায় বেলজিয়ামকেও রাখতে হচ্ছে। ১৪তম বিশ্বকাপটা বেলজিয়ানরা রাঙিয়ে তুলতে পারবে তো? উত্তরটা দূরে নয়। এটাই যে সোনালি প্রজন্মের বেলজিয়ামের শেষ সুযোগ!

বেলজিয়ানদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক ঝাঁক তারকা ফুটবলাররা। যারা গত কয়েক মৌসুম ধরে মাতিয়ে যাচ্ছেন ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবল। দলটির কোচ রবার্তো মার্টিনেজ কাকে রেখে একাদশে কাকে খেলাবেন এনিয়েই আছেন মধুর সমস্যায়! আক্রমণভাগ থেকে শুরু করে রক্ষণভাগ পর্যন্ত প্রত্যেক খেলোয়াড়ই নিজের জায়গায় সেরা হয়ে উঠেছেন।

তবে তাদের দলে নেই মেসি, রোনালদো নেইমারের মতো বড় তারকা। তবে যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই মাঝারি মানের তারকা। ইডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকো, মারুয়ান ফেলানি, ভিনসেন্ট কোম্পানি, কেভিন ডি ব্রুয়েন, মুসা ডেম্বেলে, থিবাউট কোর্তোয়াকে এক সুতোয় গাঁথতে পারাটাই হবে মার্টিনেজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গত দুই বছর ধরে সেই প্রয়াসটাই চালিয়ে যাচ্ছেন স্প্যানিশ কোচ।

এবারের বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডে বেলজিয়ামের অবস্থান ‘জি’ গ্রুপে। বড় ধরণের কোনো অঘটন না ঘটলে নক আউট পর্বে তাদের ওঠাটা নিশ্চিত। কারণ গ্রুপে ইংল্যান্ড ছাড়া তেমন শক্তিশালী দল নেই। গ্রুপপর্বে কালো ঘোড়াদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ তিউনেশিয়া ও পানামা। ১৮ জুন সোচিতে পানামার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন নাম্বারে থাকা বেলজিয়াম।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.