অনন্য ইতিহাসে ফ্রান্স- গ্রিজম্যান

এবারের বিশ্বকাপে যে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে ফিফা, তা নির্ধারণ হয়ে ছিলো আগেই। বিশ্বকাপে এবার যে সব নতুন প্রযুক্তি যোগ হয়েছে, তার মধ্য একটি হলো ভার্চুয়াল অ্যাসিসেন্ট্যান্ট রেফারি। এই প্রযুক্তি প্রথম ব্যবহৃত হলো ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া প্রথম পেনাল্টি থেকে গোল করেন ফ্রান্সের আক্রমণভাগের অন্যতম অস্ত্র অ্যান্টনি গ্রিজম্যান।

গ্রিজম্যান এই গোলের মাধ্যমে ঢুকে যান ইতিহাসে। যে ইতিহাস আর কোনোদিন নতুন করে লেখা সম্ভব নয়। বিশ্বকাপে নিশ্চয় আরো অনেকবার ভার্চুয়াল রেফারির সহায়তা নিবেন রেফারিরা, আরো অনেক পেনাল্টির সিদ্ধান্ত আসবে এবং অনেকে গোলও করবেন। কিন্তু প্রথমব গোলের মালিক থাকবেন গ্রিজম্যানই। প্রথম গোলের দল থাকবে ফ্রান্সই। এই ইতিহাসে নিশ্চয় নাম থাকবে অস্ট্রেলিয়ারও। ফার্চুয়াল রেফারির কল্যাণ যে তাদের জন্যই প্রথম অলকল্যাণ বয়ে আনে!

প্রযুক্তির সহায়তায় পাওয়া প্রথম গোল থেকেই ম্যাচে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোল; এই দুইয়ের মিশ্রণে যে আনন্দ, সেটা উদযাপন শেষ করতে না করতেই আরো একটা পেনাল্টি হয় ম্যাচ। চার মিনিট পরের পেনাল্টিটা পায় অস্ট্রেলিয়া।

অ্যারন মুই ফ্রান্সের গোলবার লক্ষ্য করে বল মারেন উড়িয়ে। সেই বলে হেড করতে গিয়ে হাত দিয়ে ছুঁয়ে বসেন স্যামুয়েল উমতিতি। ডি বক্সে বল হাত দিয়ে ছুঁয়ে অস্ট্রেলিয়াকে পেনাল্টি উপহার দেন তিনি। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে মোটেই সমস্যা হয়নি মাইল জেডিনাকের।

চার মিনিটেরও সামান্য কম সময়ের মধ্যে দুই পেনাল্টি, দুটি ভিন্ন দলের এবং দুটিতেই গোল; বিশ্বকাপ ফুটবলে এমন ঘটনা দ্বিতীয়টি নেই। অর্থাৎ ম্যাচটি ইতিহাসে ঢুকে গেছে এই ঘটনার মাধ্যমেও। ৬২ মিনিটের মধ্যে দুই দল একটি করে গোল দিয়ে ম্যাচে অবস্থান করছিলো সমতায়।

সেই সমতা কাটে গিয়ে ৮২ মিনিটে। ফ্রান্সের এক অসাধারণ আক্রমণ থেকে গোল করেন পল পগবা। ডি বক্সে তার দিকে বলটি বাড়ান এমবাপ্পে। সেই বল অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাথু রায়ানের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন পগবা। বেশ খানিকটা লাফিয়েও বলের নাগাল আর পাননি তিনি। বল চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার জালে। এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

এই গোল আর ফেরত দিতে পারেনি অস্ট্রলিয়া। ২-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। এবার নিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলছে অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে মাত্র একটিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিততে পেরেছিলো তারা, ২০০৬ সালে জাপানের বিপক্ষে। অন্য দিকে ২০০২ সালে সেনেগালের বিপক্ষে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করার পর ফ্রান্স তাদের প্রথম ম্যাচে আর কখনো হারেনি।

এই ম্যাচ শেষে ফ্রান্সের জয় বা অস্ট্রেলিয়ার হারের চেয়ে বেশি আলোচিত হয় ভার্চুয়াল অ্যাসিসেন্ট্যান্ট রেফারির প্রয়োগ। এই প্রযুক্তি বিশ্বকাপকে কতোটা বিতর্কহীন করে তুলবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। ফিফা অবশ্য বিশ্বকাপে এ প্রযুক্তি প্রয়োগের আগে লম্বা সময় ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। ফলাফল তাই ভালোই হওয়ার কথা।