লিওনেল মেসি। এই ছোট্ট নামটাই কি আজ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দযুগল? হতেও পারে। পৃথিবীর কোনো কোনো প্রান্তে মেসির সাথে হয়তো উচ্চারিত হচ্ছে এডওয়ার্ড স্মিথের নামও।

will lionel messi sink like edward smith

সেই কবে অতলান্তিকের অতলে টাইটানিকের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে ডুবে গেছেন স্মিথ, তার নাম কেনো মেসির সাথে আসবে? এমন প্রশ্ন কি উঠছে? উঠতেই পারে। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনাকেও যদি ডুবতে বসা টাইটানিকের সাথে তুলনা করা হয়, তাহলে মেসি ও এডওয়ার্ড স্মিথের নাম তো পাশাপাশিই বসবে। এ ছাড়া যে উপায় নেই।

প্রকাণ্ড বরফখণ্ডের সাথে সংঘর্ষের পর টাইটানিক রক্ষা করতে মাত্র তিন ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন স্মিথ। কিন্তু প্রাণপণ চেষ্টা করেও শেষরক্ষা করতে পারেননি। অতলান্তিকে ডুবে গেছে টাইটানিক। সঙ্গে গেছেন স্মিথও। কোনো দিন তার দেহও আর দেখেনি পৃথিবী।

রাশিয়া বিশ্বকাপকে মনে করা হচ্ছে লিওনেল মেসির বিশ্ব জেতার শেষ সুযোগ হিসেবে। এই সুযোগে দুটি ম্যাচও খেলে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু তার নামের পাশে এখনো বসেনি কোনো কীর্তি। তার এমন অনুজ্জ্বলতাই প্রকাণ্ড বরফখণ্ডের আকৃতি নিয়ে আঘাত করেছে আর্জেন্টিনাকে। টাইটানিকের মতো বিশ্বকাপ সাগরে ডুবতে বসেছে আর্জেন্টিনাও এবং এখানেই এডওয়ার্ড স্মিথের ভূমিকায় মেসি। ডুবতে বসা দলকে শেষরক্ষা করার গুরুভার তার কাঁধে।

মেসি কি পারবেন? নাকি প্রাণপণ চেষ্টাতেই থেকে যাবে তার নামের শেষ উপস্থিতি? আর আর্জেন্টিনা ডুবে যাবে হতাশার অতলান্তিকে? মেসিও হারিয়ে যাবেন এডওয়ার্ড স্মিথের মতো?

মেসি নাকি তার নিজের শহরেও খুব বেশি জনপ্রিয় নন। সেই ছোটবেলায় হরোমনজনিত সমস্যা দেহে নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন মেসি। জীবন বাঁচানোর তাগিদে মাতৃভূমীর মায়া ফেলে তাকে চলে যেতে হয়েছিলো স্পেন। আর তাতেই রোসারিওর বুকে জমে উঠে অভিমানের পাথর। শত চেষ্টাতেও যা গলাতে পারছেন না মেসি।

সমালোচকরা বার্সেলোনার মেসিকে মনে করেন পৃথিবীর সেরা। কিন্তু আর্জেন্টিনার মেসি যেনো তার নিজের ছায়া। যে ছায়ার একটা ধূসরমূর্তি হয়, তাতে ধড়ও থাকে; কিন্তু সে ছায়া প্রাণহীন। সে ছায়ায় সঞ্জীবনী শুধা নেই, সে ছায়ায় বিশ্ব জয়ের বিশ্বাস ও শক্তি নেই।

২০১৪ সালের বিশ্বকাপে মেসি এই সব সমালোচনার শরীরে ঘষতে শুরু করেছিলেন ইরেজার। মুছেও ফেলছিলেন সব। কিন্তু ফাইনালের শেষ মুহূর্তে তার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। সতীর্থদের ভুল আর নিজের দুর্ভাগ্যের কাছে হাঁটু গেড়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তে হয় তাকে। সমালোচনার তীর তাতে আরো ধারালো হয়। একটার পর একটা ছুটে এসে বিঁধতে থাকে তার গায়ে। মেসি আবার হয়ে যান বার্সেলোনার। হয়ে যান দেশ ছেড়ে বিদেশ-বিভুঁইয়ে চলে যাওয়া প্রতারক।

রোসারিও যেনো ভুলে বসে যে মেসি যদি সেই ছোট্ট বয়সে হরোমন সমস্যার ব্যঘাত নিয়ে দেশ না ছাড়তেন, তাহলে তিনি আজকের এই জায়গায় আসতে পারতেন না। মেসি হারিয়ে যেতেন মহাকালের অতল গহ্বরে। তার নামটা কেউ জানতো না। তার সাথে উচ্চারিত হতো না রোসারিওর দীর্ঘশ্বাসও।

রোসারিও যতোও অভিমান করুক, অভিমানের জমাট বাধা পাথরটা যতোই প্রকাণ্ড হোক, মেসি তো চেষ্টা কম করছেন না। কিন্তু সেই চেষ্টা মেনে নেয়ার একটাই শর্ত— জিততে হবে কাপ। এ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো শর্ত নেই। এ ছাড়া শর্তপূরণের কোনো পথ নেই।

সব বাস্তবতা জেনেই মেসি পা রেখেছেন রাশিয়ায়। প্রথম দুই ম্যাচ শেষে মনে হচ্ছে, হ্যা, মেসি শুধু পা দুটোই রেখেছেন রাশিয়ার মাটিতে। বার্সেলোনার সুকঠিন বিপদে যে মেসি আগুন হয়ে জ্বলে উঠেন, এই দুই পায়ের উপর সেই মেসি দাঁড়িয়ে নন। এই দুই পা আর্জেন্টিনার অনুজ্জ্বল মেসির। যে শুধু চেষ্টা করে যান। কিন্তু কোনো ফল পান না। ফলে তাকে ঘিরে আর্জেন্টিনার বিষাদ বাড়ে, অভিমান জমে আর বোবা কান্নায় তড়পায় পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তবৃন্দ।

তারপরও সব কিছু হতে পারে অন্য রকম। যদি মঙ্গলবার রাতে নাইজেরিয়াকে হারাতে পারে আর্জেন্টিনা, যদি তাতে জ্বলে উঠেন মেসি এবং যদি তাদের সমান্তরাল লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়া আইসল্যান্ডের সাথে অপরাজিত থাকে। এতো এতো যদির ভিড় যদি ঠেলে ফেলা যায়, তবেই মেসির সামনে আরো একটু সময় আসবে। ডুবতে থাকা আর্জেন্টিনাকে টেনে তুলতে আরো একবার ক্যাপ্টেন মেসি চেষ্টা করতে পারবেন।

এডওয়ার্ড স্মিথের গল্পটা নিশ্চয় মেসির অজানা নয়। টাইটানিককে পাড়ে ভেড়াতে না পারলেও তিনি জীবন দিয়ে গেছেন। অমর হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায় পাতায়। মেসি যদি আর্জেন্টিনাকে টেনে তুলতে পারেন, তাহলে তার গল্পটা স্মিথের গল্পকে হার মানাবে। আর যদি না পারেন— কী আর হবে, মেসি অমরত্ব তাতে ক্ষতির শিকার হবে না। ডুবে যাওয়া আর্জেন্টিনার সাথে তার নামটাও উচ্চারিত হবে। কিন্তু তাতে গর্ব থাকবে না। থাকবে বলে বিষাদের নীলাভ আবছায়া। বহুকাল পড়ে যা কেবল বিষণ্নতাই ছড়াবে কোনো দূর দেশের আর্জেন্টাইন ভক্তের হৃদয়ে।

যা মনে করিয়ে দিবে, পৃথিবী যাকে ভিনগ্রহের ফুটবলার বলে আদর করতো, পৃথিবী তাকে নিজের সবচেয়ে বড় অর্জনটা দেয়নি। তাতে কি পৃথিবীর প্রতিও কিছুটা রাগ হবে কারো? হতেও পারে!

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.