বিশ্বকাপের ফাইনালে অপ্রতিরোধ্য ফ্রান্স

এক যুগ পর বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো ফ্রান্স। মঙ্গলবার রাতে রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালের পর আবার ফাইনালে উঠলো তারা। তাদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেছেন বার্সেলোনা তারকা স্যামুয়েল উমতিতি।

২০১৬ সালে স্পেনের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে হারের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচ হারলো বেলজিয়াম। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলতে থাকা বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্মের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলো সেমিফাইনালে। শেষ হয়ে গেলো তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নও।

বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনালে উঠায় এবার নতুন একটি বিশ্বচ্যাম্পিয়নের আশা করা হচ্ছিলো। সেই আশাটা অর্ধেকে নেমে গেলো বেলজিয়ামের বিদায়ে। এখন ক্রোয়েশিয়া যদি দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারে, তবেই নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখার আশা টিকে থাকবে।

মঙ্গলবার ম্যাচের ৫১ মিনিটে উমতিতির গোলে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠার মাধ্যমে জার্মানি ও ইতালির পর ইউরোপিয়ান দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ফাইনালে উঠার রেকর্ড হয়ে গেলো ফ্রান্সের। এই কীর্তি গড়ার পথে বেলজিয়ামের বিপক্ষে তাদের জয়টি বিশ্বকাপে এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তৃতীয় জয়। অন্য কোনো দেশকে বিশ্বকাপে তিনবার হারানোর কীর্তি নেই ফ্রান্সের।

২০ বছরের মধ্যে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠার ম্যাচে ফ্রান্সকে পথ দেখান মূলত অ্যান্টোনি গ্রিজম্যান। ৫১ মিনিটে তার কর্নারে হেড করেই গোল করেন উমতিতি। এটি নিয়ে ফ্রান্সের হয়ে খেলা সর্বশেষ ২০ ম্যাচের সবকটিতে কোনো না কোনো গোলে সম্পৃক্ত থাকলেন গ্রিজম্যান। তিনি নিজে দিয়েছেন ১২টি আর সহায়তা করেছেন আটটিতে।

সেমিফাইনালে গ্রিজম্যান ও রোমেলু লুকাকুর মধ্যে যে প্রতিযোগিতার আশা করা হচ্ছিলো, তার দেখা মিলেনি। লুকাকু আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় এ দিন ছিলেন নিষ্প্রভ। যার ফল ভোগ করতে হলো বেলজিয়ামকে।

এই ম্যাচে দুই গোলরক্ষক, ফ্রান্সের উগো লরিস ও বেলজিয়ামের থিবো কোরটয়েস ছিলেন দুর্দান্ত। দুজনই একাধিক নিশ্চিত গোল সেভ করে দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে বিজয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন লরিস। ৫১ মিনিটে হজম করা গোলটি ফিরিয়ে দিতে পারেনি বেলজিয়াম। ফলে কোরটয়েসকে পরাজিত দলের সদস্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়।

ফাইনালে উঠা ফ্রান্স এবার তাকাচ্ছে ট্রফির দিকে। আসরের শুরুতে কিছুটা নিষ্প্রভ থাকলেও যতো দিন গেছে, তারা ততো হয়ে উঠেছে দুর্দান্ত। ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে ইউরো ফাইনাল হারা ফ্রান্স ফাইনালে যে মরণকামড় দিবে তা এক প্রকার নিশ্চিতই।

ফ্রান্স সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ১৯৯৮ সালে। সে সময় ফ্রান্স দলে ছিলেন দিদিয়ের দেশাম। যার হাতে এখন ফ্রান্সের কোচের দায়িত্ব। তার সামনে এখন খেলোয়াড় ও কোচ, দুই ভূমিকায়ই বিশ্বকাপ জয়ের দুর্দান্ত সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে।

খেলোয়াড় ও কোচ, দুই ভূমিকায় বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি আছে কেবল মারিও জাগালো ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের। এই ব্রাজিল ও জার্মান কিংবদন্তির পর দিদিয়ের দেশামও হয়তো পেতে যাচ্ছেন বিরল স্বাদ।