পেলের পর এমবাপ্পে

সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের তালিকা তৈরি করলে পেলের নামটা সবর ওপরেই থাকবে। সদ্য সমাপ্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে সেই মহাতারকার পাশে নাম লেখালেন উনিশ বছর বয়সী এক তরুণ। নাম কিলিয়ান এমবাপ্পে। একবার নয়, দু’ দুবার ব্রাজিল কিংবদন্তিকে ছুঁয়েছেন এই ফ্রেঞ্চ সেনসেশন।

সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে জোড়া গোলের কীর্তি গড়েছিলেন পেলে। রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পেলের সেই রেকর্ড ছুঁয়েছেন এমবাপ্পে। এত কম বয়সে নকআউট পর্বে দুই গোলের কীর্তি কেউ দেখেনি গত ৫৬ বছরে।

রোববার মস্কোর ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করে পেলের আরেকটি রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন এমবাপ্পে। টিনএজ বয়সে নকআউট পর্ব এবং ফাইনালে গোল করার একক কীর্তিটা শুধু পেলেরই ছিল। ফুটবলের রাজপুত্র পেলে দেখলেন উনিশ বছর বয়সী এক টগবগে তরুণ নাম লেখালেন তার পাশে।

১৯৫৮ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের ম্যাচে গোল পাননি পেলে। তবে নকআউট পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনালে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। তার একমাত্র ও জয়সূচক গোলের ওপর দাঁড়িয়ে ওয়েলসকে টপকে সেমিফাইনালে উঠেছিল ব্রাজিল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিক সুইডেনের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে ১৮ বছর ছুঁই ছুঁই পেলে ব্রাজিলকে এনে দেন বিশ্বকাপের ট্রফি।

টিনএজ বয়সে নকআউট পর্ব এবং ফাইনালে গোল করার বিরল কীর্তিটার পুনরাবৃত্তি করলেন এমবাপ্পে। সবচেয়ে কম বয়সী দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে ফ্রেঞ্চ সেনসেশন জিতে নিলেন স্বপ্নের বিশ্বকাপ। বয়স মাত্র ১৯, এখনই পেয়ে গেলেন শিরোপার স্বাদ।

অথচ এই সোনালি ট্রফিটা কত রথী-মহারথীর কাছে অধরা হয়ে আছে। খুব দূরে যেতে হবে না। উদহারণ আছে বর্তমানেই। গত দশ বছরের সেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরও সৌভাগ্য হয়নি বিশ্বকাপ জেতার। আশা জাগিয়েও শূন্যহাতে ফিরতে হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলার ও এমবাপ্পের ক্লাব সতীর্থ নেইমারকে। সেখানে তরুণ বয়সেই এমবাপ্পে বুঝিয়ে দিলেন এখনই তিনি কতটা পরিণত।

পিএসজির হয়ে দুর্দান্ত একটা মৌসুম খেলে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন এমবাপ্পে। ক্লাব ক্যারিয়ারের ছন্দটা বিশ্বকাপেও বয়ে এনেছেন তিনি। ফ্রান্সের জার্সিতে প্রথম বিশ্বকাপেই চার গোল করেছেন এই ফরওয়ার্ড। এছাড়া সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন দুটি।

নিজেকে প্রমাণ করতে এটাই ফ্রেঞ্চ সেনসেশনের জন্য যথেষ্ঠ হয়ে গেছে। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সের সুবাদে দলের হয়ে বিশ্বকাপ তো জিতেছেন বটেই, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের স্বীকৃতি হিসেবে এমবাপ্পে পেয়েছেন রাশিয়া বিশ্বকাপের উদীয়মান সেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি।