আপনি পড়ছেন

ঈদের ছুটিতে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে দূরে না হোক কাছে কোথাও কিংবা ঢাকার আশেপাশে বেড়াতে যেতে পারেন। ঈদের ছুটিতে ঢাকা বা তার আশেপাশে ঘুরতে যাবার মত উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া হল।

eid holiday hangout

প্রথমেই শুরু করা যাক জাতীয় সংসদ ভবন দিয়ে। নানা কারণেই সংসদ ভবন সবসময় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। বিশ্ববিখ্যাত আমেরিকান স্থপতি লুইকানের নকশায় নির্মিত জাতীয় সংসদ ভবন উপমহাদেশের অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন।

ঢাকার মিরপুরে বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন। গাছপালা, পুকুর খাল ও সরু রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকলে গোলাপ বাগান, রাস্তার পাশে আকাশমনি, শাপলাপুকুর, বাঁশঝাড়, পাদ্মপুকুর, ইউক্যালিপটাসের বাগান, গ্রিনহাউজ, ক্যাকটাসঘর দেখতে পাওয়া যায়। জাতীয় চিড়িয়াখানা এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন পাশাপাশি অবস্থিত। চিড়িয়াখানার ভেতরে লেক আর সবুজের সমারোহে বিভিন্ন প্রজাতীর প্রচুর প্রাণীর দেখা মিলবে এখানে। বসার জন্য ভালো ব্যবস্থাও আছে।

বোটানিক্যাল গার্ডেনের মত আরেকটি নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদ্যান হল বলধা গার্ডেন। ওয়ারীতে অবস্থিত জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী উদ্যানটি নির্মাণ করেন ১৯০৯ সালে। সাইকি এবং সিবিলি নামে দু’টি ভাগে বিভক্ত বলধা গার্ডেন। সাইকি অংশটিতে জনসাধারনের যাবার অনুমতি নেই কারণ এখানে কিছু দুর্লভ প্রজাতির গাছ রয়েছে যা মানুষের আনাগোনায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সাইকি অংশে রয়েছে নীল, লাল ও সাদা শাপলাসহ রঙ্গিন পদ্মা, তলা জবা, অপরাজিতা, ক্যাকটাস, পামগাছ, জবা, প্রভৃতি। ‘সেঞ্চুরি প্লান্ট’ নামক শতবর্ষে একবার ফোটা ফুলের গাছও আছে এখানে।

জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর বাগান-বাড়ির আদলে নির্মিত রোজ গার্ডেন পুরনো ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় অবস্থিত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দুর্লভ সব গোলাপ গাছে সুশোভিত, শান বাঁধানো পুকুর ও বাগানে ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলিতে নির্মিত অনেকগুলো ভাস্কর্য রয়েছে। পুরো সীমানাজুড়ে আম গাছের সারিতে ঘেরা মাঝখানে অবস্থিত কারুকার্য মণ্ডিত দ্বি-তল ভবনটি।

রাজধানীর শাহবাগে রমনা পার্ক অবস্থিত। অসংখ্য গাছ গাছালি, খাল, সরু পায়েচলার রাস্তা, সবুজ ঘাসের লন আছে ভেতরে। সব মিলিয়ে চমৎকার জায়গা। চাইনিজ রেঁস্তোরাও আছে পার্কটিতে। রমনা পার্কের উল্টো পাশেই শিশুপার্ক। শিশুদের উপযোগী নানান রকম খেলার আয়োজন ছাড়াও প্রায় ১৪টি রাইড রয়েছে পার্কে। নামে শিশুপার্ক হলেও সব বয়সীদের জন্য পার্কটি উন্মুক্ত। এছাড়া শিশুদের নিয়ে যেতে পারেন নানা ধরনের রাইড ও আয়োজনে সাজানো শ্যামলীর শিশু হাসপাতালের সামনে শিশু মেলায়।

পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থাপত্য

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল লালবাগ কেল্লা। মুঘল আমলে স্থাপিত কেল্লায় রয়েছে পরীবিবির সমাধি, দরবার গৃহ, হাম্মামখানা, মসজিদ, দুর্গ ইত্যাদি। লালবাগ কেল্লা থেকে ৩০০ মিটার উত্তরপূর্বে সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির ঢাকেশ্বরী মন্দির। লালবাগ কেল্লায় এলে মন্দিরটিও ঘুরে যেতে পারেন।

পুরান ঢাকার দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার কাছে ১৬৪৪ সালে দেওয়ান আবুল কাশেম শাহ সুজার বাসস্থানের জন্য বড়কাটরা নির্মাণ করেন। তবে শাহ সুজা কাটরাটিতে থাকেননি বরং সরাইখানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এটি। বড়কাটরার পূর্বে ছোটকাটরার অবস্থান। দূরত্ব বেশী নয়। শায়েস্তা খাঁ এটি নির্মাণ করেন। বর্তমানে দুটি কাটরাই সম্পূর্ণ বেদখল হয়ে গেছে।

বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর পারে ফরাসগঞ্জের পুরনো একটি স্থাপত্য হল উনবিংশ শতকে নির্মিত রূপলাল হাউজ। ব্যবসায়ী ভ্রাতৃদ্বয় রুপলাল দাস ও রঘুনাথ দাস নির্মিত দ্বিতল ভবনটির স্থাপত্য শৈলী অভিনব। ফরাশগঞ্জের আরেকটি অনন্য স্হাপত্য লালকুঠি। ইমারতটি লাল রঙের বলে এর নাম লালকুঠি। এটি নর্থব্রুক হল নামেও পরিচিত।নানা ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই নর্থ ব্রুক হল।

ঢাকার আর্মানিটোলায় অবস্থিত বিখ্যাত তারা মসজিদটি। মসজিটির সারা গায়ে সাদা সিমেন্টের উপর চিনামাটির শত শত ছোট বড় তারার কারুকাজ। জমিদার মির্জা গোলাম মসজিদটি নির্মান করেন। আরমানিটোলায় একসময় বিপুলসংখ্যক আর্মেনীয়র বসবাস থাকায় এখানে গড়ে ওঠে বসতি ও একটি গির্জা। ১৭৮১ সালে একজন বিত্তবান আর্মেনীয় নিকোলাস পোগজ বেশ কয়েক বিঘা জমিতে ওই গির্জার স্থলে একটি বিশাল গির্জা নির্মাণ করেন। তিনি গির্জাটির নামকরণ করেন চার্চ অব দ্য রিজারেকশন।

ঢাকার আশেপাশের জায়গা

সারা দিনের জন্য ঢাকার অদূরে যেতে চাইলে আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমে যেতে পারেন। এইরকমই আরেকটি চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র হল গাজীপুরের নন্দনপার্ক। নানা ধরনের রাইড আর বিনোদনের জন্য এটি জনপ্রিয়। ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁয়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর পানাম নগরে। দর্শনীয় স্থান হিসেবে এর যথেষ্ট কদর রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

ঘুরে আসুন অ্যাডভেঞ্চার ট্রেইল

মনোমুগ্ধকর গ্লাস বিচ

ভারত ভ্রমণের কথা: সূর্যের আলোয় বদলে যায় তাজমহলের রঙ

একশ’ পার্সেন্ট হালাল ভ্রমণ!

চলে আমার হাওয়ার গাড়ি উইড়া উইড়া