ইসরাইলে আগুন: দুর্যোগ নাকি সন্ত্রাসবাদ?

নিভেছে আগুনের শিখা কিন্তু ছাই উড়ে যায়নি। কালো ধোঁয়ায় উবে গেছে নগরের বেসাতি। এখন শুধু খাঁ খাঁ করছে শহরটা, শহরের ঘরবাড়ি, পথঘাট, অফিস, আদালত। কী পুড়েছে, কী বেঁচেছে তার হিসাব করার সুযোগ এখনও হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে, কী করে লাগলো এই আগুন! এটা কি প্রকৃতি প্রদত্ত নাকি সন্ত্রাসের অস্তিত্ব?

গত দুইমাস ধরে ভয়াবহ খরা চলছিল ইসরাইলে। ১৯২০ সালের পর মোটামুটি এক শতাব্দীতে এমন খরা দেখেনি দেশের মানুষ। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এই খরা থেকেই দাবানলের উৎপত্তি হয়েছে যাতে দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফা পুড়ে প্রায় ছাই হয়ে গেছে। দেশের ৮০ হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়েছে প্রাণে বাঁচতে। ৩০ ফুট উঁচুতে ওঠা আগুন নেভাতে বিদেশ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন পড়েছে। অর্থাৎ আগুনের পরিমাণ ও তার ভয়াবহতা অনুমানের চেয়েও অনেক বেশি।

দেশটির সরকার সন্দেহ করছেন এই আগুন সন্ত্রাসবাদের এক নতুন ধরণ। নানা মহল থেকেই সন্দেহের কাতারে ফিলিস্তিনের নাম উচ্চারিত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে এবং সন্দেহের আঙুল যার দিকেই উঠছে, আটক করছে তাকেই। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলছেন, এই আগুন মানবসৃষ্ট এবং এটাকে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ব্যাখ্যা করতে হবে। নানা জায়গায় পাওয়া দাহ্য ও তরলের অস্তিত্ব তাদের এই সন্দেহকে জোরদার করতে সাহায্য করছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, 'আগুন লাগার কারণ হিসেবে সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্য কোনভাবে দেখার সুযোগ নেই।'

প্রধানমন্ত্রীর সাথে একমত পোষণ করে দেশটির শিক্ষামন্ত্রীও টুইটারে লিখেছেন, 'যারা এই দেশের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, তারাই এই আগুন লাগিয়েছে।'

এদিকে গণনিরাপত্তা মন্ত্রী জিলাদ এডরানের বক্তব্য স্পষ্ট, নতুন ধরণের সন্ত্রাসবাদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ প্রয়োজন।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলন আবার এর উত্তরে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করছে দেশটিকেই। তাদের বক্তব্য, 'ইসরায়েলের কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনের উপর মিথ্যা দায় চাপাতে এই দুর্ঘটনাকে ব্যবহার করছে।'

এদিকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরাইলে আগুন নিয়ে ব্যবহারকারীরা নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। কেউ কেউ এটাকে দোজখের আগুন বলে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত এই আগুন। কেউ মেনে নিচ্ছে সরকারের দাবি, ফিলিস্তিনকে দেখছে সন্দেহের চোখে।

এখনও সবটাই অনুমানের ওপর নির্ভরশীল। কারণ যা-ই হোক না কেন, এর ফলে যে ক্ষতি হয়ে গেছে তা পূরণ করতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হবে দেশটির সকলকে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

ইরাকে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত শতাধিক

ইসরাইলে ভয়াবহ আগুন, ঘরছাড়া ৮০ হাজার মানুষ

বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই দেশের আচরণকে ‘নিষ্ঠুর’ বলছে এ্যামনেস্টি!

জাতিসংঘ: মিয়ানমারে জাতিগতভাবে রোহিঙ্গা নিধন চলছে

বিস্কুটের বাক্সে ভরে বাচ্চা পাচার! কতোটা অমানবিক...