আপনি পড়ছেন

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের খবর নিয়ে লিখে স্থানীয় উগ্র বৌদ্ধদের রোষানলে পড়েছেন মিন মিন নামের মিয়ানমারের একজন সাংবাদিক। ইতোমধ্যে তাঁর বাড়িতে বোমা হামলা করাসহ তাঁর ছিন্ন মাথার মূল্যও ঘোষণা করেছে উগ্র বৌদ্ধরা।

journalist min min

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে মিন মিনের সাথে কথা বলে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। মিন মিনের বরাত দিয়ে সেটিতে তারা জানায়, মিনি মিন নিজেও একজন বৌদ্ধ। ছোটবেলা থেকে তিনি জেনে এসেছেন, মুসলমানরা তাদের প্রধান শত্রু। তাদের কখনোই সাহায্য করা যাবে না।

কিন্তু একটি ঘটনা আমূল পরিবর্তন এনে দেয় মিন মিনের জীবনে। একদিন এক হাসপাতালে যান মিন মিন। সেখানে এক সন্তান সম্ভবা মুসলিম রোহিঙ্গা নারী তাঁর স্বামীর সাথে কথা বলার জন্য মিন মিনের কাছে মোবাইল ফোন ধার চান। বৌদ্ধ এই সাংবাদিক কথা বলার জন্য ওই মহিলাকে তাঁর মোবাইল এগিয়ে দিলে হাসপাতালের চিকিৎসক এসে বাধা দেন। ওই সন্তান সম্ভবা মহিলা মুসলিম জানিয়ে তাকে কোনোরকম সাহায্য না করতে মিন মিনকে আহ্বান জানান ওই চিকিৎসক। আর মোবাইল দিলেও ওই মহিলার কাছ থেকে টাকা আদায়ের কথা বলেন তিনি।

এ ঘটনার পর মুসলিমদের ওপর বৌদ্ধদের ঘৃণার পরিমাণ বুঝতে পেরে মনে মনে শিউরে ওঠেন মিন মিন। এর পর তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে লিখতে শুরু করেন। তিনি তাঁর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হওয়ার খবর এবং তাদের অন্যান্য সব সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

তাঁর এই প্রতিবেদনের কারণে রক্ষণশীল ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের রোষানলে পড়েন মিন মিন। উগ্র বৌদ্ধরা তাকে হত্যা করতে তাঁর সিতওয়ের বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। মিন মিনের পরিবারকে এলাকা ছেড়ে ইয়াঙ্গুনে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এক সময় তারা মিন মিনের ছিন্ন মস্তকের মূল্য ঘোষণা করে ২৯ হাজার ডলার। এ ঘটনার পর থেকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন মিন মিন।

এতোকিছুর পরও থেমে যাননি মিন মিন। তিনি আবারও নতুন একটি পত্রিকা বের করেছেন। পত্রিকাটির নাম দিয়েছেন রুট বা শেকড়। পত্রিকায় তিনি নিরপেক্ষভাবে মিয়ানমারের আসল চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সরকারের ইন্ধনে মুসলিমদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ সমস্ত নির্যাতনে কাগজ-কলমের হিসেবে দেশটিতে ইতোমধ্যে ৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়েছেন ৩০ হাজার জন। তবে আসল চিত্র আরও ভয়ানক।

এদিকে রাখাইন প্রদেশে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর বর্বরতার খবর বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সরকার। ধর্ষণ ও হত্যাসহ আরও অনেক নির্মমতার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে আসলেও বর্মী সরকার কখনোই তা স্বীকার করেনি।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় সারা বিশ্বে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করায় দেশটির শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচির পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবিও উঠেছিলো। এদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক প্রকাশ্যে এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এই গণহত্যার সমালোচনা করেছেন। এছাড়া তিনি দেশটিতে বার্মিজ নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে আশিয়ান

ওবায়দুল: নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবেন না

মোজাম্মেল: রাজাকারদের তালিকা করা হবে

পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ব্যাপক রদবদল

‘প্রবেশকারীদের নামের তালিকা করার প্রশ্নই আসেনা’

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.