কমনওয়েলথ: রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে রাখুক বাংলাদেশ

জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুখ খুলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা কমনওয়েলথ। অতীতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল এমন স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ নিয়ে গঠিত সংস্থাটি রোহিঙ্গা সমস্যাকে মানবতার জন্য গভীর সংকট বলে আখ্যায়িত করেছে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড বলেছেন, ‘বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অসহায় নির্যাতিত। আশ্রিতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আমি পালিয়ে আসা এসব অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশকে সীমান্ত খুলে রাখতে উৎসাহিত করছি। নিপীড়িত রোহিঙ্গারা নিরুপায় হয়েই নিজ বাড়িঘর ছেড়ে প্রাণভয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

রোববার দেয়া বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক প্রশংসা করেন কমনওয়েলথ মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘সংকটের সময় লাখ লাখ মানুষকে খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও তাদের জনগণ কমনওয়েলথের মূল্যাবোধকে সমুন্নত রেখেছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের এই ভূমিকাকে স্বাগত জানাই।’

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইন প্রণেতারা বলেন, ‘অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে। রাখাইনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সহিংসতাপূর্ণ এলাকা এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়া স্থান, রোহিঙ্গা গ্রামে দুর্যোগ সহায়তা দানকারী বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করতে দিতে হবে।’

সু চির সমালোচনা করে সংস্থাটির আইন প্রণেতারা বলছেন, 'মিয়ানমারে মানবাধিকার রক্ষা, সংখ্যালঘুদের প্রতি প্রয়োজনীয় সম্মান প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কারণেই সু চিকে শান্তিতে নোবেল দেয়া হয়েছে। কিন্তু সু চি এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। বিষয়টি আমাদের ব্যাথিত করেছে।’

চলতি বছরের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির পুলিশের তল্লাশি চৌকি ও সীমান্তরক্ষীদের সেনাক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। মিয়ানমার বলছে, হামলার সঙ্গে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা জড়িত। এরপর দেশটির সেনাবাহিনী অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে নিধনযজ্ঞ চালায়। এরপরই দলে দলে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিতে থাকে বাংলাদেশে। জাতিসংঘের হিসাবে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।