আপনি পড়ছেন

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন অঞ্চলে সম্প্রতি বাংলাদেশের দুজন সাংবাদিক প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে গত ২৫ আগস্টের পর কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিক দেশটির সহায়তায় সেখানে যেতে পারলেও বাংলাদেশের এই দুজন সাংবাদিক নিজ চেষ্টায় সেখানে প্রবেশ করতে পেরেছেন।

mayanmar rakhine fire

বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক আমানুর রহমান রনি গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে রাখাইনে তমব্রু এলাকায় প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি দুই ঘন্টা অবস্থান করে পাঁচটি পাড়া ঘুরে দেখার সুযোগ পান। এসব পাড়ায় তিনি দেখেছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং মগদের হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। সন্ধ্যায় তিনি ফিরে আসার ঠিক কিছুক্ষণ আগেই ওই এলাকার একটি গ্রামে আগুন দেওয়া হয়।

আমানুর বলেন, ‘এর আগেও আমি রাখাইনে প্রবেশের চেষ্টা করেছি। কিন্তু নিরাপত্তার দিক নিশ্চিত না হওয়ায় প্রবেশ করতে পারিনি। সবশেষ বৃহস্পতিবার আমি বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ি দিয়ে মিয়ানমারে প্রবেশ করতে সক্ষম হই। নো-ম্যান্স ল্যান্ড পার হলেই রাখাইনের তমব্রু।’ 

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ সুযোগ বুঝে ঘরবাড়ি দেখে আসতে সেখানে ফিরে যান এমন তথ্য উল্লেখ করে তিনি জানান, রোহিঙ্গারা নিজেদের সহায় -সম্পদ দেখে আবার শরণার্থী ক্যাম্পে ফিরে আসছেন। এমনই দুজন রোহিঙ্গার সহায়তায় তিনি সেখানে প্রবেশ করেন। 

আমানুর দুই কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে প্রবেশ করতে পেরেছেন জানিয়ে বলেন, ‘যতো ভেতরের দিকে যাচ্ছিলাম, ততোই ধ্বংসের চিত্র দেখতে পেয়েছি। বাড়িগুলো সব পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ছাই ও আগুনের আলামত ধুয়ে গেছে। তাই দেখে মনে হয়, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এসব ঘরবাড়িতে লুটপাটেরও স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের একদম সীমান্তবর্তী এলাকায় কিছু অক্ষত বাড়ি ঘরদেখা গেছে।'

আমানুর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের গ্রামের পরই মগদের গ্রাম। সেই গ্রামগুলো অক্ষত আছে। দূর থেকে সেসব গ্রামের ফসলের মাঠ দেখা যায়। আমি দেখেছি, মগেরা নিশ্চিন্তে শস্যক্ষেতে কাজ করছেন। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে মগদের গ্রামের পাশে একটি রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দেয়া হয়, সেসময় আমি ওখানেই অবস্থান করছিলাম। ওই গ্রামের নাসিমা খাতুন নামে একজন নারী সীমান্তে দাঁড়িয়ে বিলাপ করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমি এই আগুনের ঘটনা ভিডিও করেছি। এরপর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণে দ্রুত বাংলাদেশে চলে আসি।’

এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে দেশের ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক আদিল সাখাওয়াত রাখাইনে প্রবেশ করেন। তিনি মংডুর টাউনশীপের মধ্যে শিলখালি ও কুলখালি এলাকা দেখে আসেন। একটি ব্রিজ দিয়ে এলাকা দু’টি সংযুক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার উনচিপ্রাং সীমান্ত দিয়ে নৌকায় করে তিনি সেখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। তিনিও নির্যাতনের চিত্র দেখে এসেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। 

আদিল বলেন, ‘আমি ভেতরের দিকে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু রোহিঙ্গারা বারবার নিষেধ করেছেন। আর তাছাড়া সেখান থেকেই মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের আউটপোস্ট দেখা যাচ্ছিল। আমি যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কাছে ধরা পড়তাম। তবে ওখান থেকেই দূরের গ্রাম পুড়তে দেখা যাচ্ছিল।’

দূর থেকেই নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়ার দাবি করে আদিল বলেন, ‘আমার সাথে কোন ফটোগ্রাফার ছিল না। আমি নিজেই মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করি। এসব ছবিতে রোহিঙ্গাদের সাথে বর্বরতার প্রমাণ রয়েছে।’

সাংবাদিক আমানুর রহমান রনি ও আদিল সাখাওয়াত, দুজনই আবারও মিয়ানমারে প্রবেশের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তারা সরেজমিনে দেখে জানাতে চান মিয়ানমারের রাখাইনের নির্মম ঘটনা। কিন্তু সেটা বৈধভাবে সম্ভব না হলে সাংবাদিকতার কৌশল অবলম্বন করতে হবে বলে মনে করেন তারা।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.