অবশেষে তুরস্ক থেকে টমেটো আমদানি করছে রাশিয়া

আগামী ডিসেম্বরে তুরস্ক থেকে ৫০ হাজার টন টমেটো আমদানি করবে রাশিয়া। রয়টার্সের বরাত দিয়ে তুরস্কের জনপ্রিয় গণমাধ্যম হুররিয়াত ডেইলি নিউজ জানায়, রাশিয়া ও তুরস্ক উভয় দেশ টমেটো বাণিজ্য পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়েছে। বুধবার রাশিয়ার জ্বালানী মন্ত্রী অ্যালেকজেন্ডার নোভাক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রয়টার্স জানায়, আগামী ১ ডিসেম্বর তুরস্ক থেকে টমেটো আমদানি শুরু করবে রাশিয়া। গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিজেদের চাহিদা বিবেচনা করে আগামী শীতকালীন মৌসুমের জন্য মস্কো তুরস্ক থেকে টমেটো আমদানি করতে পারে। ২০১৫ সালের সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার জেরে তুরস্কের খাদ্য আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো রাশিয়া। বর্তমানে দুই দেশের কূটনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের টমেটো রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খুব জনপ্রিয়। আর রাশিয়া তাদের মোট সবজিপণ্যের ২০ ভাগ আমদানি করে থাকে তুরস্ক থেকে। এএফপির তথ্যমতে, বছরে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। কিন্তু ২০১৫ সালের নভেরে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার জেরে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়া। সেসময় তুরস্কের খাদ্য আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

পরে উভয় দেশ নিজেদের স্বার্থে কূটনৈতিক সমাধান বের করে নেয়। ধাপে ধাপে তুরস্কের নির্মাণ, পর্যটন এবং হোটেল ব্যবসা খাতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্বের প্রভাবশালী এ দেশটি। এবার খাদ্য নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিল রাশিয়া।

তুরস্কের ওপর আরোপিত খাদ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও অনেক দিন ধরে ওই দেশ থেকে টমেটো আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে সরকার। কারণ হিসেবে ওই সময় উল্লেখ করা হয়, দেশীয় উৎপাদনকারীদের সহায়তার জন্যই টমেটোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিল তারা। ওই সময়ের কূটনৈতিকভাবে ‘হাতে মারতে না পারলে ভাতে মারব’- এমন নীতি গ্রহণ করে রাশিয়া। ওই সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় তুরস্ককে ক্ষমা চাইতে হবে।

২০১৬ সালের ২৮ জুন বিমান ভূপাতিতের ঘটনার জন্য এরদোয়ান নিহত পাইলটের পরিবারের প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানান। এতে সম্পর্ক স্বাভাবিকের দিকে মোড় নেয়। এর পরের মাসেই ১৫ জুলাই ‘যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ সমর্থনে’ ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত এরদোয়ান সরকারকে সক্রিয় সমর্থন দেয় রাশিয়া। এরপর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে।