আপনি পড়ছেন

সৌদি রাজপরিবারের ঐতিহ্যগত শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে দেশটিতে কি ‘এক ব্যক্তির শাসন’ চালু হয়েছে? গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহে সৌদির ঐতিহ্যগত পারিবারিক শাসন যে এখন একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দিকে যাচ্ছে অন্তত তাই স্পষ্ট হচ্ছে। আর এতে টার্গেট হয়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় এলিট শ্রেণী। খবর আল-জাজিরা।

Muhammad bin salman Crown prince saudi arabia

চলতি বছরের শুরু থেকে বেশকিছু ক্ষেত্রে এককভাবে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। যেগুলো গত প্রায় এক শতাব্দীকাল ধরে চলে আসা রাজপরিবারের পুরনো ঐকমত্যভিত্তিক শাসনের বিপরীত।ঐকমত্যের শাসনের কয়েক দশকের পুরনো পদ্ধতি বাতিল করে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বর্তমানে রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি নিচ্ছেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ও সৌদিবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেছেন।

ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্রিসটোফার ডেভিডসন বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আলোচিত অভিযান মোহাম্মদ বিন সালমানের সুলতানি ক্ষমতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তার মতে, প্রভাবশালী রাজপুত্রই, মিডিয়া মোগল, শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের এই গণগ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে বিন সালমান আসলে দেখাতে চাচ্ছেন যে, কেউই তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়।’

সিআইএ’র সাবেক কর্মকর্তা ও ব্রুকিংস ইন্টেলিজেন্স প্রজেক্টের পরিচালক ব্রুস রিডেল ডেভিডসনের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে সৌদি আরবের সাম্প্রতিক গণগ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ব্রুস রিডেল ডেভিডসন বলেন, ‘সৌদি রাজপরিবারের রাজনীতি ঐতিহ্যগতভাবে ঐকমত্যভিত্তিক যা পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমান মর্যাদা ও সম্মানের সুরক্ষার প্রতি বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সৌদির সেই ঐতিহ্যগত ঐকমত্যের শাসনে ভাঙন দেশটির অভ্যন্তরে বিপর্যয় ডেকে আনবে। কারণ পরিবারের মধ্যে অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভের ফলে রাষ্ট্র (সৌদি আরব) একটা অস্থিতিশীলতার দিকে এগুবে।’

যেভাবে মোহাম্মদ বিন সালমানের এতো ক্ষমতা: ২০১৫ সালে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই ৩২ বছর বয়সী মোহাম্মদ নিজের ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেন। এক্ষেত্রে তিনি সৌদি রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের ও দেশের ধর্মীয় ব্যক্তিদের মধ্যে যারা তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে তাদেরকে চাপে রাখার বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেন।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন সালমান আল-আওদাহ ও আওয়াদ আল-কারনিসহ কয়েকডজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে গ্রেপ্তার করে সৌদি পুলিশ। তাদের সবাই এখন পর্যন্ত কারাগারে বন্দি। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিংহাসনের বর্তমান উত্তরাধিকারী মোহাম্মদ বিন সালমানের সবচেয়ে বেশি উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপটি আসে শনিবার। বেশ কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন তিনি। এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন তার চাচাতো ভাই ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী আল-ওয়ালিদ বিন তালাল, রাজপরিবারের অন্তত ১৭ জন প্রিন্স, ৪ জন শীর্ষ মন্ত্রী এবং কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী।

এছাড়াও আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো- মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বৃহত্তম মিডিয়া কোম্পানি মিডিলইস্ট ব্রডকাস্টিং সেন্টারের (এমবিসি) চেয়ারম্যান ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ওয়ালিদ আল- ইবরাহিম এবং সৌদি বিনলাদেন গ্রুপের চেয়ারম্যান বকর বিন লাদেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ এখন কোথায় কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের জুন থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গুজব রয়েছে, তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.