পদত্যাগ করছেন না প্রেসিডেন্ট মুগাবে

দলীয় প্রধানের পদ থেকে বহিষ্কার করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের দুই জন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। এর আগে দেশটির ক্ষমতাসীন দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট (জানু-পিএফ) মুগাবে ও তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবেকে দল থেকে বহিষ্কার করে। 

ধারনা করা হচ্ছিলো, গতকাল রোববারের ভাষণে মুগাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন। কিন্তু সেনাপ্রধান চিয়েঙ্গাসহ সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে বৈঠকের পর আগামী ডিসেম্বর মাসে ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফের সম্মেলনের আগ পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে দলীয় প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছে জানু-পিএফ। স্থানীয় সময় রোববার সকালে জানু-পিএফ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে মুগাবের সঙ্গে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও বৈঠক করেন। স্থানীয় দ্য নিউজডে পত্রিকা জানায়, রোববারের বৈঠকেই দলের শীর্ষ নেতারা মুগাবেকে ‘বিদায়ী প্রেসিডেন্ট’ বলে অভিহিত করেন।

স্ত্রী গ্রেস মুগাবেকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য দুই সপ্তাহ আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়াকে বহিষ্কার করেছিলেন মুগাবে। এরপরই ১৯৮০ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায় থাকা ৯৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেকে গৃহবন্দি করে কার্যত রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান ঘটায় দেশটির সেনাবাহিনী।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি মুগাবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকীতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা কার্ড পড়ছেন তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়া। ছবি: রয়টার্স

তবে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নিলেও গত চার দিনে দেশে সেনাশাসন জারি করা হয়নি, এমনকি সংবিধান স্থগিত কিংবা প্রেসিডেন্টকেও পদচ্যুতও করা হয়নি। সেনাবাহিনী শুরু থেকেই দাবি করছিলো, এই পদক্ষেপ কোনোভাবেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে জিম্বাবুয়ে। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ৯৩ বছর বয়সী মুগাবে দীর্ঘ ৩৮ বছর দেশটি শাসন করছেন। জীবনের শেষ ক্রান্তিলগ্নে এসে মুগাবে তার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে ৫২ বছর বয়সী স্ত্রী গ্রেসকে দেখতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনার জেরেই অর্থনীতিতে কঠিন সংকটে পড়া দেশটিতে কার্যত সেনা অভ্যুত্থান ঘটে।