উস্কানি দেবেন না, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে এরদোয়ান

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।  তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি যে, এমন কোনো উস্কানি দেবেন না যাতে উত্তেজনা বেড়ে যায়। কারণ, জেরুজালেম আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান, আমাদের (মুসলিমদের) স্বার্থ রক্ষায় যে কোনো কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে পারি।’ 

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশেনে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট প্রসঙ্গে এরদোয়ান বলেন, ‘এ বিজয়ে আমরা (মুসলিমরা) জেরুজালেম ইস্যুতে বিশ্ববাসীর সমর্থন পেয়েছি। ব্ল্যাকমেইলিং ও হুমকি উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসী প্রমাণ করেছেন টাকা দিয়ে মূল্যবোধ কেনা যায় না। এটা বিশ্ববাসীর নৈতিক বিজয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে অনুষ্ঠিত মুসলিম কমিউনিটির সর্ববৃহৎ সংগঠন নর্থ আমেরিকা-মুসলিম আমেরিকান সোসাইটির ১৬তম কনভেনশনে ভিডিও ম্যাসেজে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশেনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিপক্ষে জেরুজালেম ইস্যুতে বিশ্বের ১২৮টি দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন এরদোয়ান।

বিশ্বের চলমান সংকটের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুসলিম বিশ্বের উদ্দেশে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘আপনাদের শক্তিটা কী, সেটা বুঝতে হবে। এখন সময় হয়েছে, মুসলিম বিশ্বের নিজেদের সামর্থের বিষয়টা বুঝা। 

নিজেদের মধ্যে বিবাদ বিভাজনের কারণে মুসলিম বিশ্বের শক্তিগুলো প্রকাশ পাচ্ছে না। বরং নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে বিশ্বে মুসলিমদের অবস্থান দুর্বল হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে সতর্ক করে  এরদোয়ান বলেন, ‘আমাদের মাঝে কাউকে জাতি ও গোত্রগত বিভাজন তৈরি করতে দেব না।’

এরদোয়ান বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি ও কূটনৈতিক সংকটগুলোর বেশিরভাগ এখন মুসলিম বিশ্বে চলছে। যখন আমরা এসব সমাধান করতে চেষ্টা করি তখনই নতুন করে দুঃখজনক ঘটনার সৃষ্টি করা হচ্ছে। একদিকে মুসলিমরা যখন সিরিয়া, ইরাক, ইরান, সোমালিয়া ও ইয়েমেনে সন্ত্রাসবাদ, দুর্ভিক্ষ ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন এই দেশগুলোকেই আবার পশ্চিমাদের সাংস্কৃতিক বৈষম্য ও ইসলামবিদ্বেষ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।' 

পশ্চিমা দেশগুলোতে ভোটের রাজনীতি জন্য মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে অভিযোগ করে এরদোয়ান বলেন, ‘তবে তার চেয়েও খারাপ কথা হচ্ছে, এই বৈষম্য নিয়ে কারো কোনো উদ্বেগ নেই। সংখ্যালঘুদের (মুসলিমদের) বিরুদ্ধে বৈষম্য ও ঘৃণা চর্চার প্রসঙ্গ পশ্চিমা রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা উদাস হয়ে যান।’ 

আমেরিকান সমাজের বিভিন্ন স্তরে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা মুসলিম নেতাদের তুরস্কের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, ‘যারা দ্বৈতনীতি (মুনাফেকী) অবলম্বন করে (মুসলিম) সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’