সরকার সমর্থকদের দখলে রাজপথ, শান্ত হচ্ছে ইরান

ইরানে 'অর্থনৈতিক বেহাল দশা ও দুর্নীতি'র বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন নানা কারণে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। তবে ইরানি বিভিন্ন মাধ্যম দাবি করেছে, ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়েছে এই আন্দোলন। আন্দোলনের উৎসস্থল ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মাশাদ এখন সরকার সমর্থকদের দখলে।

ইরানের বিপ্লবী বাহিনীর প্রধান দাবি করেছেন, 'সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে দেশটিতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ দমন করা হয়েছে। তারা পরাজিত হয়েছে।' এদিকে ইরানের প্রাদেশিক শহরগুলোতে সীমিত অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখাচ্ছে, 'সরকারের সমর্থনে সমাবেশ আরো বড় হচ্ছে।'

আন্দোলনের আটদিন পর আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে কোন ধরনের বিক্ষোভের কোনো খবর দেখা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ভিডিওগুলোতে কেবলমাত্র প্রাদেশিক শহরগুলোতে সীমিত অস্থিরতার খবর দেখা যাচ্ছে। সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দুল্লাহিম মুসাভিন, এই আন্দোলনকে রাষ্ট্রদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহের আগুন নেভানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

গতকাল বুধবার ইরানি কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের অবসান ঘোষণা করে। দেশটির ইসলামিক রেভ্যুলিউশনস গার্ড (আইআরজিসি) বা বিপ্লবী বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জাফারি বলেন, 'বিক্ষোভকারীদের দমন করা হয়েছে। সব ধরণের ষড়যন্ত্র পরাজিত হয়েছে।' এদিকে রাজধানী তেহরানের দশ হাজারেরও বেশি সরকার সমর্থক সমাবেশ করেছেন। মাশাদে অস্থিতিশীলতা তৈরির পর এটিই সরকারের পক্ষে সবচেয়ে বড় জমায়েত।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার ইস্পাহান ও আরডেবলসহ ইরানের ১০টি শহরে সরকারের সমর্থনে জনতার ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাশাদের রাজপথও সরকার সমর্থকদের দখলে বলে অনেক জায়গায় খবর এসেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা আলি আকবর ভ্যালয়াতি আঞ্চলিক আইএসএনএ নিউজ এজেন্সিকে জানান, 'বিপ্লবী ইরানিরা রাস্তায় নেমে আসায় শত্রুদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।'

প্রসঙ্গত, গত ২৮ ডিসেম্বর ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মাশাদে দেশটির চলমান অর্থনৈতিক বেহাল দশা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে সাধারণ জনগণ। সেই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৪৫০ জন।