২০ বছর ক্ষমতায় থেকেও বাড়ি নেই মন্ত্রীর, দলীয় কার্যালয়ে বাস

কোন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক পর্যায়ের একজন হলেন মন্ত্রী। একজন মন্ত্রীর যেমন রয়েছে বিশেষ ক্ষমতা তেমনি অর্থবিত্তও ধরা দেয় তাদের। অনেক মন্ত্রী তো আবার ক্ষমতায় আসার পর আঙ্গুল ফুলে বনে যান কলাগাছ। কিন্তু প্রতিবেশি ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন ত্রিপুরা রাজ্যের সদ্য বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নেই কোন নিজস্ব বাড়ি, তাই বাধ্য হয়ে উঠেছেন দলীয় কার্যালয়ে।

ভারতের ত্রিপুরায় ভোটে জিতে সরকার গঠন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজেপির প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেব। অন্য দিকে ভোটে হেরে গেছেন বামফ্রন্ট নেতা সদ্য বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, টানা চার মেয়াদে মোট ২০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন কমিউনিস্ট নেতা মানিক সরকার। কিন্তু তার নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই, ছিলেন সরকারি বাড়িতে।

বিজেপি নেতা বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেয়ার আগের দিন বৃহস্পতিবার স্ত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্যকে নিয়ে তিনি আগরতলায় সিপিআই (এম) অফিসে উঠেছেন। দুই রুমের ছোট্ট একটি ফ্ল্যাটে থাকছেন তারা।

মানিক সরকারের দল ত্রিপুরা সিপিআই(এম)-এর সাধারণ সম্পাদক বিজন ধর বলেছেন, 'পার্টি অফিসে বসবাসের জন্য সাধারণ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। আমাদের নেতারা সাদাসিধে জীবন-যাপনেই অভ্যস্ত।' দলের দপ্তর সম্পাদক হরিপদ দাশ বলেন, 'দলীয় কার্যালয়ের রান্নাতেই চলবে মানিক সরকারের পরিবার।'

জানা গেছে, ত্রিপুরার মার্কস-এঙ্গেলস সড়কে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িটি ছাড়ার আগেই সেখান থেকে কিছু বই ও জামা-কাপড়ের প্যাকেট দলীয় কার্যালয়ের নতুন ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে কয়েকটি সিডিও আনেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।

স্থানীয় পত্রিকাগুলো বলছে, পিতার সম্পত্তি বোনকে দিয়ে দেন মানিক সরকার। দলীয় কার্যালয়ে থাকার অভিজ্ঞতা আগেও ছিল। স্ত্রী পাঞ্চালি অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। আগরতলা শহরে অল্প কিছু জমিও রয়েছে তার। জমিটা আবাসন প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার পর সেটি নিয়ে ঝামেলা বাঁধে আর ভবনের নির্মাণ কাজও শেষ হয়নি। ফলে দলীয় কার্যালয়েই দিন কাটছে নিঃসন্তান এই দম্পতির।

তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বিদায়ী মন্ত্রী মানিক সরকারের জন্য সরকারি ভালো আবাসনের ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বিরোধী দলীয় নেতাও একজন মন্ত্রীর মর্যাদাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সরকার পরিচালনার জন্য জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলেও স্বপ্নের ত্রিপুরা গড়তে মানিক সরকারের ভূমিকা অবশ্যই স্বীকার করছি।'