প্রবল চাপের মুখে মুসলিম-বিরোধী অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ফেসবুক

প্রবল চাপের মুখে ব্রিটেনে মুসলিম-বিরোধী একটি দলের সবগুলো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। একাধিকার অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের নীতিমালা ভঙ্গ করার জন্য ‘ব্রিটেন ফার্স্ট' নামের দলটির বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়ার হয়েছে বলে জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

সম্প্রতি ব্রিটেন ফার্স্টের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও জুলুম’র অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে চলতি মাসের শুরুর দিকে দলটির প্রধান পল গোল্ডিং এবং জেডা ফ্রান্সেনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। দলটির ফেসবুক পেজে ২০ লক্ষেরও বেশি লাইক রয়েছে।

ফেসবুক জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ বারবার সতর্ক করে দেয়ার পরও তাতে কান দেয়নি ব্রিটেন ফার্স্ট। সর্বশেষ হুঁশিয়ারিও দলটির নেতারা উপেক্ষা করায় পাতাগুলো অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ব্রিটেন ফার্স্ট’র নেতারা এখন আর কোন পেজ চালাতে পারবেন না। সেইসঙ্গে স্বনামে বা বেনামে নতুন করেও কোন পেজ চালু করতে পারবেন না।

ফেসবুক মনে করছে, ব্রিটেন ফার্স্ট’র ফেসবুক পাতায় আপলোড করা ছবি ও ভিডিও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে উৎসাহিত করছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে টুইটারও পল গোল্ডিং এবং জেডা ফ্রান্সেনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়।

ফেসবুকের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ব্রিটিশ সংসদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আশা প্রকাশ করেন, অন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে। এছাড়া ব্রিটেন ফার্স্টকে ‘নীচ এবং বিদ্বেষপূর্ণ’ সংগঠন বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান।

বিবিসি জানিয়েছে, ফেসবুক পাতায় আপলোড করা ব্রিটেন ফার্স্টের এক নেতার ছবিতে লেখা ছিল- ‘আমি মুসলমান-বিরোধী এবং এর জন্য আমি গর্বিত।’ অপর এক ছবির ক্যাপশনে মুসলমানদের ‘পশুর সাথে তুলনা’ করা হয়েছে।

এছাড়া পোস্ট করা বেশ কয়েকটি ভিডিও’তে মুসলমানদের সম্পর্কে ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ মন্তব্য রয়েছে। ওই সব মন্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন।

এর প্রেক্ষাপটে সবার মতামতের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে একটি ব্লগ প্রকাশ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়, সব ধরনের মতামত প্রকাশের জন্য এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হবে। তবে মতামতের মধ্যে কোনো ঘৃণা প্রকাশ করা হবে না।

বিতর্কিত ভূমিকার জন্য ব্রিটেন ফার্স্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ফেসবুকের ওপর ক্রমশই চাপ বেড়েই চলছিল। যার ফলে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নিয়ে ঘৃণা ছড়ানো হলে সংশ্লিষ্ট পেজগুলো সরিয়ে নেয়ার নীতির কথা ঘোষণা করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।