আহত সেই ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘মানবিক সহায়তা’ পাঠাল ইসরায়েল!

এ যেন ‘গরু মেরে জুতা দান’ প্রবাদের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ। গত ৩০ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলিয়ে চালিয়ে ১০৪ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। আহত করেছে ১২,৬০০ জনকে। ইসরায়েলি সেনাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি আট মাসের শিশুও। এবার সেই আহত ফিলিস্তিনিদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা সামগ্রী পাঠিয়ে নতুন নাটকের জন্ম দিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পাঠানো আট ট্রাক চিকিৎসা সহায়তা সামগ্রী গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে গাজার হামাস সরকার। বুধবার গাজা-ইসরায়েল-মিশর সীমান্তবর্তী কেরেম শালম পয়েন্ট দিয়ে এই চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়।

‘প্রত্যাবর্তনের মহাযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি সেনাদের প্রাণঘাতি গুলি এবং উচ্চমাত্রার টিয়ারশেলে এসব ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছিলেন। টিয়ারশেল নিক্ষেপে ব্যবহার করা হয়েছিল ড্রোনও।

আই টুয়েন্টিফোর নিউজকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘ওই চিকিৎসা সহায়তা সামগ্রী ইতোমধ্যে গাজায় পৌঁছেছে। সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভয়াবহ অবস্থা এবং চিকিৎসা সামগ্রীর সরবরাহ না থাকা সত্ত্বেও হামাস এই মানবিক সাহায্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ওই সহায়তা সামগ্রী ইসরায়েলে ফেরত পাঠাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হামাস।’

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থেকে পাঠানো চার ট্রাক এবং ইউনিসেফের দেয়া দুই ট্রাক চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী বুধবার গ্রহণ করেছে। তবে ইসরায়েলের পাঠানো সহায়তা গ্রহণ করেনি।

‘প্রত্যাবর্তনের মহাযাত্রা’ নামে গত ৩০ মার্চ থেকে ছয় সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইসরায়েল যেসব ভূখণ্ড ও গ্রাম দখল করেছিল, সেখানে ফিরে যাওয়ার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘মহা-বিপর্যয় তথা আল-নাকবা’ দিবস হিসেবে পরিচিত ১৫ মে। ওই দিন পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার সীমান্তে এই বিক্ষোভ পালন করা হয়।

তবে গত ১৪ মে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ওই দিন ইসরায়েলি সেনারা ৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ২,৪০০ জনকে আহত করে।

মুসলিমদের পবিত্র শহর জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের রাজধানী মনে করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে তাদের দূতাবাস স্থানান্তর করেন। ফিলিস্তিনসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে।

সূত্র: স্পুৎনিকনিউজ।