ইইউ কাউন্সিল ভবনের সামনে কেনো ৪,৫০০ জোড়া জুতা?

ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) কাউন্সিল ভবনের ভেতরে চলছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। ভবনের বাইরে সারি সারি করে রাখা সাড়ে চার হাজার জোড়া জুতা। গত এক দশকে ইসরায়েলিদের হাতে নিহত সাড়ে চার হাজার ফিলিস্তিনির সংখ্যার সঙ্গে মিল রেখে জুতাগুলো সেখানে রাখা হয়। উদ্দেশ্য ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধে চাপ দেবে ইউরোপ।

আভাজ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা অভিনব এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সংস্থাটির সিনিয়র ক্যাম্পেইনার ফাদি কোরআন বলেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নেতাদের বলার আমাদের একটা কথা আছে- ফিলিস্তিনিদের জীবনেরও মূল্য আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি- শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ হলো ইসরায়েলের ওপর অবরোধ আরোপ করা। এটাই একমাত্র উপায় আমরা যার আশ্রয় নিতে পারি এবং এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

ফাদির মতো ফিলিস্তিনি অ্যাটিভিস্টরা গত ২০০৫ সাল থেকে ‘বয়কট, ডাইভেইসমেন্ট অ্যান্ড স্যাঙ্কশনস-বিডিএস’ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি ফিলিস্তিনে সহিংসতা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই কর্মসূচি আরও গতি পেয়েছে।

ইসরায়েলি পণ্য বয়কট, তাদের সঙ্গে কোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ না হওয়া এবং দেশটির ওপর অবরোধ আরোপে বিশ্বজুড়ে এই কর্মসূচি পালন করে আসছে অ্যাক্টিভিস্টরা। তবে এই কর্মসূচিকে ইহুদি-বিদ্বেষের তকমা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে ইসরাইয়েল।

গত ১৪ মে ইসরায়েলে মার্কিন দূতবাস তেলআবিব থেকে মুসলিমেদের তৃতীয় কিবলার শহর জেরুজালেমে স্থানান্তরের দিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৬০ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী নিহত হন। এরআগে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানায়। অবশ্য এখন পর্যন্ত নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সোমবারের ওই বৈঠক থেকে এই ইস্যুতে ইউরোপের দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ঘোষণার কথা ছিল।

আভাজের আরেক জ্যেষ্ঠ ক্যাম্পেইনার ক্রিস্টোফ শট বলেন, ‘এখানকার সহস্রাধিক জোড়া জুতা শিশুদের কথা বলছে। আমি আমার মেয়ের জুতা জোড়াও নিয়ে এসেছি। সেসব বাবা, মা,ভাই এবং বোনের পাশে দাঁড়াতে এখানে এসেছি, যারা তাদের সন্তান ও সহোদরদের হারিয়েছেন।’

সূত্র: আরটি ডটকম