ছেলেধরা গুজবে গুগল ইঞ্জিনিয়ারকে গণপিটুনিতে হত্যা

শিশুদের চকোলেট খেতে দেয়ায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে এক তরুণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ আজম (৩২) সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলে কর্মরত ছিলেন।

ভারতের কর্নাটক রাজ্যের বিদার জেলায় শুক্রবার মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। আহতদের মধ্যে কাতারের এক নাগরিকও রয়েছেন। আহতদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর: এনডিটিভি ও জিনিউজ চব্বিশ ঘণ্টা।

দুই সন্তানের জনক নিহত মোহাম্মদ আজম হায়দ্রাবাদের মালাকপেটের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে সালাম এইদাল কুবাইসি নামে ৩৮ বছরের এক যুবক কাতারের নাগরিক। আহত বাকি দুজন- নুর মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ সালমানের বাড়ি হায়দ্রাবাদের বারকাসে।

নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হত, পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার হায়দ্রাবাদ থেকে বিদারে গিয়েছিলেন চারজন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মুরকি গ্রামে একটি স্কুলের কাছে চা খেতে দাঁড়ান তারা। এসময় ওই পথ দিয়ে বাড়ি ফিরছিল স্কুল পড়ুয়ারা।

ছোট্ট স্কুল শিক্ষার্থীদের দেখে তার কাছে থাকা বিদেশি চকোলেট বিলি করতে শুরু করেন কাতারের নাগরিক সালাম। এর মধ্যেই ‘ছেলেধরা ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। এতে লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে বিপদ বুঝে গাড়িতে উঠে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন চারজন।

কিন্তু এরই মধ্যে তাদের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেয় কয়েকজন। পরে গ্রামের রাস্তায় গাছ ফেলে গাড়ি আটকায় স্থানীয়রা। এসময় বাধা টপকে রাস্তার পাশ দিয়ে দ্রুতগতিতে যাওয়ার চেষ্টা কর করলে গর্তে পড়ে যায় গাড়িটি।

এরপর গাড়ি থেকে চারজনকে টেনে বের করে শুরু হয় গণপিটুনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলেও উন্মত্ত জনতার সামনে কিছুই করতে পারেনি তারা। এনিয়ে ভারতে ‘ছেলেধরা’ গুজবে অন্তত ২০ জনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হলো।

স্থানীয় অউরাদ থানার কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় হোয়টসঅ্যাপ গ্রুপের তিনজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তারা ওই চার যুবকের ছবি ছেলেধরা বলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে দিয়েছিল। এছড়া গণপিটুনিতে জড়িত ৩০ জনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।