আপনি পড়ছেন

জীবন যেনো নতুন জীবন উপহার দিলো তাদের। গুহার অন্ধকারে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ১৭ দিন থাকার পর তাদের উদ্ধার করা হয় শ্বাসরুদ্ধকর এক অভিযানে। বেঁচে ফেরার পর তাদের সাতটা দিন কাটে হাসপাতালের বিছানায়। এরপর আবার তাদের পায়ে এসে মাথা ঠুকলো আগের জীবন। আবার তারা ফুটবল পায়ে বেরিয়ে পড়লো জীবনের জয়গানে।

thailand boy footballers out of hospital

এখন থেকে আবার প্রতি বিকেলে ওয়াইল্ড বোরসের জার্সি গায়ে মাঠ মাতাবে থাইল্যান্ডের কিশোর ফুটবলাররা। যাদের বেঁচে ফেরা পুরো পৃথিবীতে দমবন্ধ অনভূতি থেকে মুক্তি দিয়েছে। যাদের জন্য প্রার্থনার হাত মেলে ধরেছিলেন পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ।

বুধবার থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই হাসপাতাল ছেড়েছে সেই ১২ কিশোর ও তাদের ফুটবল কোচ। তার আগে হাসপাতালের একটি কক্ষে তাদেরকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় সাংবাদিকরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং কিশোররা এর উত্তর দেয়।

যে কক্ষে কিশোরদের সংবাদ মাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়, তাতে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় ছোট এক ফুটবল মাঠ। সেখানে কিছুক্ষণ সময় ফুটবল নিয়ে কারিকুরিও করে বাচ্চারা। এরপর সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনা হয় তাদের।

সেখানে আদুল সাম-অন নামের এক কিশোর প্রথম তাদের সন্ধানকারীর মুখ দেখার অনুভূতির কথা বর্ণনা করে। সে বলে, ‘আমরা যখন গুহার ভেতরে একজন অন্য মানুষকে দেখি, চমকে যাই এবং আমি তাকে হ্যালো বলি। কারণ সে দেখতে বিদেশিদের মতো ছিলো। ওই মুহূর্তটা আমাদের জন্য ছিলো ম্যাজিকের মতো।’

থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধারের পর এই প্রথম কিশোরদের সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনা হলো। তার আগে সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে তাদের জন্য প্রশ্ন নেয়া হয়। সেই সব প্রশ্ন মনোবিদরা পরীক্ষা করে দেখেন। যে প্রশ্ন কিশোরদের মনে কোনো রকম বাজে প্রভাব ফেলতে পারে, তা আগেই বাতিল করে দেয়া হয়।

সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কিশোররা নানা প্রশ্নের জবাব দেয়। এক কিশোর বলে যে, তার বাড়ি যেতে ভয় করছে। কারণ তার মনে হচ্ছে গুহায় গিয়ে আটকা পড়ার কারণে তার বাবা-মা তাকে বকা দিবে। অন্য এক কিশোর উদ্ধারকারীদের মাধ্যমে চিহ্নিত হওয়ার আগে তাদের বেঁচে থাকার গল্প বলে।

সে বলে, ‘আমরা শুধু পানি খেতাম। বৃষ্টির পানি খুব স্বচ্ছ ছিলো। শুধু পানি খেয়েই আমরা সেখানে বেঁচে ছিলাম। তবে আমাদের কেউ কেউ খাবারের কথা চিন্তা করতো না। এতে খিদে বেড়ে যেতো।’

দলটির সঙ্গে গুহায় আটকে পড়েছিলেন তাদের কোচও। ২৫ বছর বয়সী কোচ বাচ্চাদেরকে গুহার ভেতরে অনুপ্রাণিত রাখার চেষ্টা করেছেন এবং তাদের মনোবল দৃঢ় রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গুহায় আটকা পড়ার পর ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু হতাশ হয়নি। একটা সময় আমরা গুহার পাথর ঘষে ঘষে বের হওয়ার রাস্তা বের করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম।’

১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ গত ২৩ জুন এক ঘণ্টার জন্য থাম লুয়াং গুহায় বেড়াতে যান। কিন্তু ভাগ্য তাদের সেখানে আটকে রাখা টানা ১৭ দিন। গত দুই জুলাই গুহা মুখ থেকে চার কিলোমিটার ভেতরে তাদের সন্ধান পান একজন বৃটিশ ডুবুরি। এরও পাঁচদিন পর তাদের উদ্ধার করা শুরু হয়। তিনদিনের রুদ্ধশ্বাস অভিযানে তাদের প্রত্যেককে গুহা থেকে বের করে আনা হয়।

এর আগে গুহার ভেতরে চিকিৎসক পাঠানো হয়। কিশোরদের জন্য পাঠানো হয় খাবার ও অক্সিজেন ট্যাংক। এই কাজ করার সময় থাইল্যান্ডে নেভি সিলের একজন সাবেক ডুবুরি মারা যান। তিনি স্বেচ্ছায় কিশোরদের উদ্ধারে কাজ করতে এসেছিলেন। পুরো উদ্ধার অভিযানে ৯০ জন ডুবুরি কাজ করেন। তাদের মধ্যে ৪০ জন ছিলেন থাইল্যান্ডের। বাকি ৫০ জন বিদেশি ছিলেন।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.