ইউটিউব দেখে বাড়িতেই প্রসব, মর্মান্তিক মৃত্যু প্রসূতির

ইন্টারনেটের যুগে ইউটিউব-গুগল মানুষের জীবনকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কোন কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে তার সব রকম সহযোগিতাই করতে পারে ইন্টারনেটের এই দুই আশির্বাদ। তবে তাই বলে ইউটিউব দেখে বাচ্চা ডেলিভারি! ভাবতেই কেমন যে গা শিউরিয়ে উঠছে। কিন্তু এমন অবিবেচক কাণ্ডই করেছেন ভারতের এক স্বামী। ফলে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর।

ইউটিউব দেখে বাচ্চা ডেলিভারির কথা শুনেই অনেকের নিশ্চয়ই বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা 'থ্রি ইডিয়টস'-এর কথা মনে পড়েছে। সিনেমাটিতে কলেজের কমনরুমে টেবিল টেনিসের বোর্ডে এমন ‘ডেলিভারি সিন’ নিয়ে উঠেছিল নানা কথা। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের এমন কাজ বাস্তব জীবনে করতে গিয়েই প্রাণ গেল মহিলার। 

বহুল আলোচিত এই ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর তিরুপুর শহরে। ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী কার্তিকেয়নকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। ডাক্তাররা বলছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই মারা গেছেন স্ত্রী কৃতিগার। স্বামীর পাশাপাশি দম্পতির পরিচিত এক আত্মীয়কেও আটক করেছে পুলিশ। তবে নবজাতকটি সুস্থ আছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ২৮ বছর বয়সী কৃতিগারের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। তবে তাকে হাসপাতাল নিয়ে যাননি স্বামী এবং বাড়িতে নিজেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেন।

জানা গেছে, স্ত্রীর প্রসবের জন্য অনেক আগে থেকেই ইউটিউবে ভিডিও দেখা এবং ইন্টারনেটে পড়াশোনা করছিলেন কার্তিকেয়ন। তিনি সন্তান প্রসবে সফলও হন তবে কিছুক্ষণ পরেই জ্ঞান হারান কৃতিগা। এরপর অবশ্য অ্যাম্বুল্যান্স মা ও বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে জীবনের আলো নিভে গেছে মা কৃতিগার। চিকিৎসকরা জানান, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই মারা গেছেন কৃতিগা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে স্বামী কার্তিকেয়ন জানান, পরিবারের সকল সদস্যই স্বাভাবিক প্রসবে বিশ্বাস করতেন। নবজাতকটি ছাড়াও তাদের সংসারে তিন বছরের একটি কন্যাও রয়েছে। কৃতিগার গর্ভে দ্বিতীয় সন্তান আসার আগেই কার্তিকেয়নের মা থাঙ্গাভেলু মারা যান। পরিবারের বিশ্বাস ছিল কৃতিগার গর্ভেই ফের পৃথিবীতে আসবেন থাঙ্গাভেলু। গর্ভধারণের পর কোনো চিকিৎসকের কাছে চেক-আপও করাননি ওই দম্পতি।

জানা গেছে, পরিবারের সবাই গর্ভবতী কৃতিগাকে বাড়িতে প্রসবের জন্য বলতেন। ওই এলাকায় কার্তিকেয়ন পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় দম্পতি প্রভীন কুমার এবং লাবণ্যও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের বিরোধিতা করতেন। পুলিশ এই দম্পতিকেও আটক করেছে।