মিয়ানমার সেনাপ্রধানকে নিষিদ্ধ করলো ফেসবুক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্মম নির্যাতনের জেরে দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লায়িংকে নিষিদ্ধ করেছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে রাখাইনে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের জন্য সেনাপ্রধানকে দায়ী করার পর এমন ব্যবস্থা নিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। দেশটির সেনাপ্রধান ছাড়াও মোট ২০ জন বার্মিজ ব্যক্তি মানুষ ও বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

সোমবার এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এক বিবৃতিতে বলছে, এসব পেজ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোপন বার্তা ছড়ানো হতো। বিশেষ করে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লায়িংসহ বার্মারসহ ২০ জন ব্যক্তি ও সংগঠন এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত মাইওয়াডি টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে আমরা ফেসবুকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছি।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে বিবৃতিটি এমন সময় দেয়া হয়েছে, যখন জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হচ্ছে। এমনকি মিয়ানমার সেনা প্রধানকে অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে জাতিসংঘ।

ফেসবুকের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমাদের সেবা ব্যবহার করে জাতিগত নিধনে ও ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়ানোর মতো ঘটনা আর ঘটতে দিতে পারি না। তাই এ ধরনের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি ফেসবুক পেজ, ছয়টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছি।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী গ্রুপ আরসার হামলাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যম বলছে, মূলত রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের নিজের বাসভূমে ফেরার সব পথ বন্ধ করতেই মিয়ানমারের এই অভিযান চালিয়েছে। এমনকি আরসার সেদিনের সেই হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে সেনা-অভিযান চালানো হয়। এরপর জাতিগত নিধন, হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয় রোহিঙ্গা মুসলমানরা। সেই সময় অত্যাচার নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্টি বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।