মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন খাদিজা আক্তার নার্গিস। খাদিজা এখন নিজেই নিজের খাবার খেতে পারেন। কোনো কিছুর উপর ভর দিয়ে চলতেও পারেন। নার্গিস পুরোপুরি সুস্থতার জন্য দেশবাসির কাছে দোয়া চেয়েছেন। রোববার তিনি হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় যাওয়ার কথা রয়েছে। নিজ গ্রামে ফিরে আবারো লেখাপড়া শুরু করতে চান তিনি।
স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খাদিজার স্বাস্থ্যের খবর জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় স্কয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিস পরিচালক মির্জা নাজিম উদ্দিন, নিউরোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. এ এস রেজাউল সাত্তার, অর্থোপেডিক বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. মেজবাউদ্দীন আহমেদসহ খাদিজার বাবা মাসুক মিয়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খাদিজার জেনারেল ও নিউরাল অবস্থা এখন ভালো হওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মির্জা নাজিম উদ্দিন। খাদিজার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে অবগত করে এখন ভালো কোথাও রিহ্যাব ফিজিওথেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
খাদিজা গুরুতর আহত হওয়ার এবারই প্রথম প্রকাশ্যে এসে কথা বলেন। তার চিকিৎসকরা বলছেন, খাদিজার আর কোন আশঙ্কা নেই। তার বাম হাত এবং বাম পায়ে ৭৫ ভাগ ইনজুরি রয়েছে। তার থেরাপির প্রয়োজন। আগামীকাল সোমবার খাদিজাকে থেরাপি দেয়ার জন্য সাভারের সিআরপি-তে নিয়ে যাওয়া হবে।
গণমাধ্যমের সামনে এসে খাদিজা উপস্থিত সবাইকে সালাম দেন। নার্গিস বলেন, 'যারা আমার খোঁজ খবর নিয়েছেন, আমার জন্য দোয়া করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের দোয়ায় আমি এখন সুস্থ আছি, অনেক ভালো আছি। আমার পুরোপুরি সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন।'
দেখা যায়, নার্গিসের মাথার ব্যান্ডেজ খুলে রাখা হয়েছে। কেবল বাম হাতে একটি ব্যান্ডেজ দেখা যায়। তবে মাথার বিভিন্ন অপারেশনের চিহ্নগুলো এখনো স্পষ্ট। শরীর অনেকটা চাঙ্গা তবে এখন ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন। নার্গিস বলেন, 'বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে, হাসপাতালে বন্দী হয়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না।'
আবারো জীবন ও লেখাপড়া চালিয়ে যাবার ইচ্ছা পোষণ করেছেন নার্গিস। হতে চান ব্যাংকারও। তিনি জানান, বাড়ি ফিরে আবারো কলেজ যাবো। লেখাপড়া শুরু করবো। বড় হয়ে ব্যাংকার হবো। বাবা-মায়ের দেখাশোনা করতে চাই।
গত তিন অক্টোবর সোমবার বিকেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে এমসি কলেজ থেকে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। এরপর থেকেই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ-তে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন আছেন খাদিজা আক্তার নার্গিস। এদিকে জেল-হাজতে রয়েছেন ঘাতক বদরুল।