শিক্ষামন্ত্রী: সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যয়ভার নিয়ে আলোচনা হয়েছে

সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যয়ভার ও কর্মসংস্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের হামলা ও ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঘটনায় পুলিশের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজন ও বেদনাদায়ক।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ঢাবির অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

ছাত্ররা যৌক্তিক কারণেই আন্দোলন করেছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছয়-সাত মাস ধরেই শিক্ষার্থীরা তাদের সেশনজট, ক্লাস, পরীক্ষা ইত্যাদি নিয়ে ভুক্তভোগী। স্বাভাবিক কারণেই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের হামলায় রাজধানীর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান প্রায় সিংহভাগ দৃষ্টিশক্তি হারাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যয়ভার ও কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

এ সময় মন্ত্রী জানান, অনেক পীড়াপীড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই সাতটি কলেজের দায়িত্ব নিয়েছে। আইনগত কারণে আমরা কিছু বলতে পারছি না। দেশের অন্যান্য কলেজের মতো এই সাতটি কলেজও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে চেয়ে ও পীড়াপীড়ি করে সাতটি কলেজের পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে।

তিনি জানান, কলেজগুলো অধীনে নেয়া প্রসঙ্গে ঢাবির বক্তব্য ছিল, এই কলেজগুলো এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই ছিল। এ সময় ওই সাত কলেজের বর্তমান সংকট খুব দ্রুত সমাধান হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি আইন দ্বারা পরিচালিত হয় জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আইনগত কারণে তারা সরকারের কাছে দায়বদ্ধ না। আমরাও কোনো কথা বলতে পারছি না। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতভাগ ব্যয় বহন করছে সরকার।

তবে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান নাহিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে এটার সুষ্ঠু সমাধান হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।

এরপর গত বৃহস্পতিবার ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্রুত সেশনজট নিরসন, পরীক্ষা গ্রহণ, পর্যাপ্ত ক্লাস নিশ্চিতকরণ ও সাতটি কলেজের জন্য পৃথক ওয়েবসাইট চালু করার দাবিতে শাহবাগে আন্দোলন করেন। ওই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালালে সিদ্দিকুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩০ জন আহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাক্তারের ভাষ্যনুযায়ী, পুলিশের হামলায় সিদ্দিকুর রহমান তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।