উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

টানা বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে প্লাবিত দেশের উত্তর জনপদ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত কয়েকদিনে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। এরমধ্যে দিনাজপুরে ১৪ জন, কুড়িগ্রামে ৫ জন, লালমনিরহাটে ৪ জন ও নীলফামারীতে ১জন মারা গেছেন।

উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম বন্যায় সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আজ সোমবার শিশুসহ মোট পাঁচজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গতকাল রোববার থেকে উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। মূলত পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা, তিস্তা, ধরলা, আত্রাই, করতোয়াসহ সব নদ-নদীর পানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বন্যায় বাড়িঘর ডুবে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

দিনাজপুর: আজ সকালে দিনাজপুর সদর উপজেলায় বন্যার পানির স্রোতে একজনের মৃত্যু খবর পাওয়ো গেছে। এর আগে গত দুই দিনে দিনাজপুর সদরসহ জেলার খানসামা, বিরল, বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলায় ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেন।

জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকার নয়টি বাঁধ ভেঙে গেছে। নদীর পানি কমলেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢোকা অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী কর্মকর্তা সিদ্দিকুরজ্জামান বলেন, ‘রোববার পুনর্ভবা নদীতে পানির উচ্চতা আজ ৩৮ দশমিক ২৮ মিটার। অন্যদিকে আত্রাই নদীতে পানির উচ্চতা ৪০ দশমিক ১০ মিটার। যা গতদিনের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত।

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট পাউবো জানিয়েছে, সোমবার সকালে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। রেল বিভাগ জানিয়েছে, বন্যায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটের ভোটমারী থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত, কুড়িগ্রামের রমনা বাজার থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় রুট, লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে তিস্তা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যায় বিগত কয়েকদিনে তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সোমবার সকালে কুড়িগ্রামের সবগুলো নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে ধরলা নদীর পানি ১৩২ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৬৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া ইউনিয়নে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি, রাজারহাট, কালুয়া এবং ফুলবাড়ীর গোড়কমণ্ডল এলাকায় ভেঙ্গে গেছে নদীর বাঁধ। বন্যা পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় মূল সড়ক ভেঙে সড়ক ও রেল যোগাযোগ অকার্যকর হয়ে পড়েছে।