বিএনপির হারুন কি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন?

এমপি হিসেবে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা নিয়ে পরবর্তীতে তা বিক্রি করে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদকে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর)  দুদকের মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এরপর গুঞ্জন উঠেছে, এই নৈতিক স্খলনের দায়ে তার সংসদ সদস্য পদ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে কি না।

ইতোমধ্যে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় জেলহাজতে হারুন। সংবিধান বলছে, কোনো সংসদ সদস্য নৈতিক স্খলন জাতীয় কোন কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলে হতে পারে। তবে আইন অনুযায়ী এখনই সংসদ সদস্য পদ হারাচ্ছেন না বিএনপির আলোচিত সাংসদ হারুন অর রশিদ। কেননা মামলার বিষয়ে তার উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ এখনো রয়েছে। সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের কথাই বলেছেন।

দেশের সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ‘কোনো ব্যক্তি যদি নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন এবং কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, সেই সঙ্গে কারামুক্তি পাঁচ বছর না হলে তিনি সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন না।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ই চূড়ান্ত। সেই রায়েও যদি তার সাজা বহাল থাকে তাহলে (৬৬ (২) এর (ঘ) উপধারা) সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে। তবে অবশ্যই এটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত হারুনের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হচ্ছে না।

তবে সাংসদদের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে দুর্নীতির মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। সে সময় বদির আইনজীবীরা জানান, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত তার সদস্য পদ বহাল থাকবে। পরে অবশ্য উচ্চ আদালত থেকে খালাস পান বদি।

প্রসঙ্গত, শুল্কমুক্ত আমদানির সুযোগের অপব্যবহারের মামলায় বিএনপির এমপি হারুন অর রশিদ হারুনকে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) সোমবার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। আদালত তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, হারুন অর রশিদ ২০০৪ সালে ১১.৬৫ লাখ টাকায় একটি শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করেন। পরে ইমতিয়াজের সাথে যোগসাজসে গাড়িটি ৯৭ লাখ টাকায় এনায়েতুর রহিমের কাছে বিক্রি করেন। এ ঘটনায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ হারুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তেজগাঁও থানার এসআই মো. ইউনূছ আলী।