যে বাজারে সবজি কিনতে পয়সা লাগে না!

বাজারে গিয়ে যে সবজিটা পছন্দ হয় নিয়ে আসুন, আপনাকে কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হবে না। কারণ বাজারের নামই যে ‘বিনা পয়সার বাজার’! ভাবছেন, এমনটা আবার হয় নাকি? আলবৎ হয়, তাও আবার করোনাকালের এই মহা দুঃসময়ে। অনন্য এই উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন।

বিনা পয়সার বাজার থেকে সবজি নিচ্ছে অসহায় মানুষ

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পুরো দেশটাই স্থবির হয়ে আছে। সঙ্গত কারণে অনেক কৃষকের সবজিগুলো খেতেই পঁচে যাচ্ছে। অভিযাত্রিক সেগুলো পাইকারি দামে কিনে নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে, তাও আবার বিনা পয়সায়। এতে করে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি উপার্জন হারিয়ে যেসব মানুষ না খেয়ে থাকার জোগাড় তারাও খেতে পারছেন তাজা সবজি। তবে শর্ত হলো, নিতে হবে পরিবারের প্রয়জনানুসারে, যতটা ইচ্ছে ততটা নয়।

অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন কিন্তু হঠাৎ করেই এমন উদ্যেগ নেয়নি। ২০১৬ সাল থেকেই তারা নানাভাবে অসহায় মানুষকে সহায়তা দিয়ে আসছে। সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষ কিংবা অনেক প্রতিষ্ঠান তাদেরকে এ বিষয়ে সহায়তা করে থাকে। বর্তমানে ৩২ জেলায় ফাউন্ডেশনটির প্রায় ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবী মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।

করোনার এই সময়ে যেহেতু কৃষকরাও বিপদে, তাই এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে অভিযাত্রিক। পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার মিরপুর-১, মিরপুর-১২, মিরপুর সাড়ে ১১, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, রায়েরবাজার এলাকায় ভ্রাম্যমান বাজার বসিয়ে সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ফাউন্ডেশন জানায়, করোনার প্রাদুর্ভাব যতদিন থাকবে ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে তারা।

সুদূর রংপুর ও পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় সবজি নিয়ে আসে অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন

এই কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সাদ বিন সাত্তার বলেন, আমাদের বাজারে প্রায় সব সবজিই রয়েছে। এগুলো আমরা নিয়ে আসি রংপুর ও পঞ্চগড় থেকে। ঢাকায় এনে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখার পর নিমিষেই সেগুলো শেষ হয়ে যায়। আমরা যা নিয়ে আসতে পারি, মানুষের চাহিদা তার চেয়ে ২০ গুণ বেশি। সহায়তা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

ফাউন্ডেশনের সভাপতি আহমেদ ইমতিয়াজ জামি বলেন, এটা আমাদের অনেকগুলো উদ্যোগের মধ্যে একটি। প্রথমে আমাদের ফেসবুক পেইজে এসে নিবন্ধন করার মাধ্যমে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এভাবে ১ হাজার ২০০ পরিবারের কাছে বিভিন্ন পণ্যের ২৫ কেজির ত্রাণের প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছি আমরা। আরও ৮০০ প্যাকেট প্রস্তুত করা আছে। কিন্তু এত বেশি আবেদন আসছে যে, ওই উদ্যোগটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি আমরা। তার পরিবর্তে এখন প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মানুষকে ইফতার দিচ্ছি। সামনে আরো নানাভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।