৬০ দিন: তুলনামূলক স্বস্তিতে বাংলাদেশ!

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের দুই মাস পার করল বাংলাদেশ। গত ৮ মার্চে প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্তের ভেতর দিয়ে শুরু হয় দেশের করোনাকাল। তারপর আক্রান্ত এবং মৃতের তালিকা লম্বা থেকে আরো লম্বা হয়েছে। তবে অন্যান্য দেশে আক্রান্তের দুই মাসের মাথায় পরিস্থিতি যেখানে ছিল, সেই তুলনায় বাংলাদেশ ভালো আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা অবশ্যই স্বস্তির খবর। তবে কিছু ভুল না করলে আমরা আরো ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম।

কিছু ভুল না করলে আমরা আরো ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম

প্রাদুর্ভাবের দুই মাস শেষে (৯ মে পর্যন্ত) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৭০ জন। মৃত্যু হয়েছে ২১৪ জনের। তবে আমাদের টেস্ট করার হার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। দুই মাস শেষে পরীক্ষা করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষকে।

চীনে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২৯ ডিসেম্বরে। দুই মাস পর অর্থাৎ ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার ৮২৪ জন। মৃতের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৩৫ জন। ইতালিতে প্রথম শনাক্ত হয় ৩১ জানুয়ারি। দুই মাস পর অর্থাৎ ৩১ মার্চে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৭৯২ জন। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৪২৪ জনের।

উদাহরণ দেওয়া যায় স্পেনেরও। প্রথম শনাক্তের দুই মাসের মাথায় দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৯৫ হাজার ৯২৩ জন, মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৪ জনের। যুক্তরাজ্যে প্রথম দুই মাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২৫ হাজার ১৫০ জন ও ২ হাজার ৪২৫ জন। ফ্রান্সে প্রথম দুই মাসের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৩০৪ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১০০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, দুই মাস পরের এই তুলনামূলক পরিসংখ্যান তো অবশ্যই স্বস্তির। কিন্তু প্রতিরোধের বেলায় আমরা যদি আরেকটু ভালো পারফর্ম করতে পারতাম তাহলে অবস্থাটা আরো ভালো থাকতো। যেমন আমরা কোয়ারেন্টাইনটা ভালো করতে পারিনি। সরকারিভাবে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। হোম কোয়ারেন্টাইনে মানুষ বিধি-নিষেধ কতটুকু পালন করে, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, শুরুর দিকটা আমরা ভালো করতে পারলে মাঝপথে এসে খেই হারিয়ে ফেললাম। তাই স্বস্তির এই পরিসংখ্যানের আড়ালে একটা অস্বস্তিও কাজ করছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস, মার্কেট, মসজিদ খুলে দেওয়াটা বোধহয় ভালো হলো না।