সুস্থ হওয়ার পর করোনার রিপোর্ট, বাড়ি লকডাউন!

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করার পর রিপোর্ট আসতে ১৬ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সময়ের মধ্যে অনেক রোগী কোয়ারেন্টাইনে থেকে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। অথচ ১৬ দিন পর রিপোর্ট দিয়ে বাড়ি লকডাউন করে দেয়া হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার সাংবাদিক ধীমান দাস বলেন, গত ৮ জুন তার শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ১৩ জুন ওই হাসপাতালে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করান। এর ১৫ দিন পর গত ২৮ জুন তার প্রতিবেদন পেলে জানা যায় তার করোনা পজেটিভ।

তিনি বলেন, নমুনা দিয়ে আসার পর থেকেই আমি সুস্থ হয়ে যাই। তারপরও সতর্কতা হিসেবে ২০ জুন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম। এরপর সুস্থ হয়ে যাওয়ায় এবং শরীরে কোনো সমস্যা না থাকায় বাড়ি থেকে বের হই। অথচ ২৮ জুন করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর আমার বাড়ি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান এ এইচ নুর ইসলাম শাহ বলেন, করোনা সন্দেহে গত ১৩ জুন এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে তিনিসহ তার স্ত্রী ইসমত আরা, ছেলে ইশফাফ ইসলাম নাঈমসহ পরিবারের পাঁচজনের নমুনা জমা দেন। পরে রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় ১৯ জুন সৈয়দপুর ক্যান্টমেন্টের বুথে ফের নমুনা জমা দেন।

সেখান থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টে সবারই করোনা নেগেটিভ আসে। অথচ নমুনা জমা দেয়ার ১৬ দিন পর গত ২৯ জুন দিনাজপুর মেডিকেল থেকে জানানো হয় তিনিসহ তার পরিবারের চার সদস্যের করোনা পজেটিভ।

একই অভিযোগ করেছেন বোচাগঞ্জ উপজেলার মুজাটিবাজার চাপাইপুর গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ রায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া রামেশ্বরপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মাহমুদুল হাসানসহ আরো অনেকে। সবাই বলছেন, নমুনা দেয়ার ১৫-১৬ দিন পর রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে।

অভিযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নমুনা জমা পড়ছে। এতে করে সেখানে নমুনার স্তূপ তৈরি হচ্ছে। যার কারণে রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে। যদি পিসিআর ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হয়, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালটির মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবে দায়িত্বরত একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, এই ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা থেকে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ নমুনা আসে। সিরিয়াল অনুযায়ী সবগুলোর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার পরও রিপোর্টগুলো দ্রুত দেয়ার চেষ্টা করি।