গণমাধ্যমে আর কথা বলবেন না তিনি

দেশে করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর নানাভাবে আলোচনায় এসেছেন তিনি। নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। ওইসব অভিযোগের পর গণমাধ্যমেও তাকে কম কথা বলতে দেখা গেছে। এর মধ্যেই গত ১৮ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত কোভিড-১৯ বিষয়ক স্বাস্থ্য বুলেটিনে হাজির হয়েছিলেন। সেদিন যা বলেছিলেন, সে বিষয়ে পরে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতাকেও কথা বলতে হয়েছে। তার পর থেকে তাকে আর গণমাধ্যমে সেভাবে কথা বলতে দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ

এবার তিনি নিজেই জানালেন যে, গণমাধ্যমে আর কথা বলবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না বলেও জানা গেছে।

এর আগে করোনা থেকে মুক্ত হয়ে (তার দাবি) গত ১৮ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে হাজির হন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। ওইদিন তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা যে মতামত দিয়েছেন, তা থেকে বোঝা যায়, দেশের করোনা পরিস্থিতি আগামী দুই বা তিন মাসে শেষ হবে না। এই পরিস্থিতি দুই থেকে তিন বছর কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে।

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদ (নিচের সারির সর্ব ডানে)

তিনি বলেন, সে বিষয়টি বিবেচেনায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওই সময় তিনি কিছু পদক্ষেপেরও কথাও জানান গণমাধ্যমকে।

কিন্তু তার ওই বক্তেব্যে পর গোটা দেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। মানুষ যখন করোনা মহামারির কারণে দিশেহারা তখন স্বাস্থ্য বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার এমন বক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে মন্তব্য করা হয়। সেইসঙ্গে তার বক্তব্যে মানুষ হতাশ হবে বলেও মন্তব্য করা হয়।

এমনকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্যের সমালোচনা করতে হয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের (পেছনে, গালে হাত)  সঙ্গে বৈঠকে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদ (বামে কালো শার্ট পরিহিত)

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির স্থায়ীত্ব নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেওয়া বক্তব্য অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন। তার এ বক্তব্য মানুষকে হতাশ করেছে। দায়িত্বশীল পদে থেকে দেশের এই ক্রান্তিকালে তার এমন বক্তব্য দেওয়া মোটেও সমীচীন নয়। সেতুমন্ত্রী এক পর্যায়ে তাকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এমন ওই বক্তব্যের পর পরই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। বলেন, দ্রুততার সঙ্গে বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট তৈরি করায় এবং তা ভালো করে পরীক্ষা না করায় এমনটা হয়েছে। আবার তার বক্তব্য ভুলভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। ওই ঘটনার পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আর সেভাবে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি।