কমেছে সংক্রমণ, আগস্টে দ্বিতীয় ধাপের শঙ্কা

দেশে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেছে। এরই মধ্যে এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২৭৫ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রমণের চূড়ান্ত ধাপ পেরিয়ে দেশে এখন আক্রান্তের হার কমতির দিকে। তবে নানা অব্যবস্থাপনা ও সতর্কতা না মানলে খুব শিগগিরই দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ আসার (সেকেন্ড ওয়েভ) আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

আগস্টের শেষে দেশে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণের আশঙ্কা- ফাইল ছবি

তাদের মতে, আসন্ন কোরবানির ঈদে যদি সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করা হয় এবং করোনা মোকাবেলায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে দেশে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। আগস্টের শেষ বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে সংক্রমণের এ সেকেন্ড ওয়েভ আসতে পারে। যা দেশের পরিস্থিতিতে আরো ভয়ংকর করে তুলবে। এর পর আসবে শীতকাল। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু যখন তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয় এবং পবিত্র রমজানের ঈদ উপলক্ষে মানুষ গ্রামের বাড়িতে আসে, তখন ধীরে ধীরে সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে। যার জের এখনো রয়েছে।

করোনাভাইরাস- প্রতীকী ছবি

তিনি আরো বলেন, দেশে এখন কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কমতে থাকলেও ফের দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ আসতে পারে। তাই সকলকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সতর্ক থাকতে হবে। এখন রোগী শনাক্তের হার কমছে বলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানবো না, এমনটা করলে ফের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে দেশ।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিফ কনসালটেন্ট ডা. আবদুর রব বলেন, প্রতিটি দেশেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ আসে। অতীতের মহামারিগুলো থেকে দেখা গেছে, প্রথম ধাপের সংক্রমণের ত্রুটিগুলো থেকেই দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ ঘটে। এতে মারাত্মক প্রাণহানিও হয়েছে।

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা বলছেন, করোবানির ঈদের পরই দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ আসতে পারে। আগস্টের শেষ অথবা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এই সেকেন্ড ওয়েভ আসার ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওই সময় শীতকাল আসায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

তবে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণের আশঙ্কা মাথায় রেখে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে কোরবানির ঈদে সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখা, ঈদের আগেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, ঈদের ছুটি সীমিত করা।