করোনায় ডিএনসিসির ‘ডিজিটাল হাট’

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল শনিবার ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট’ নামের এ অনলাইন প্লাটফর্মের উদ্বোধন করা হয়।

কোরবানির পশুর হাট- পুরান ছবি

অনলাইনে পশু বিক্রির এ কার্যক্রম পরিচালনা করবে ডিএনসিসি, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং এটুআই। এতে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন এবং বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়।

জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহায় প্রতিবার কোরবানির পশুর ব্যাপক চাহিদা থাকে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে এবার অন্যান্যবারের মতো পশুর হাট বসানো সম্ভব নয়। তাই কোরবানির পশুর চাহিদা ও জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে অনলাইনে পশু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি। তাই প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট’।

ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট

তবে অনলাইন প্লাটফর্মে কোরবানির পশু বিক্রি একেবারেই সহজ কাজ নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, অনলাইনে পশু বিক্রিতে অনেকে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন- চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে পশুর যোগান দেওয়া, সঠিক সময়ে কোরবানির পশু ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়া। প্রথমবারের মতো চালু করায় এতে অনেক ভুল-ত্রুটি হতে পারে। তবে এখান থেকেই শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এভাবে পশু বিক্রি করা যাবে।

অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবার রাজধানীর অনেক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোরবানির পশুর হাট না বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি। পাশাপাশি মানুষ যাতে এ সংক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকে, তাই এবার কোরবানির পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস প্রত্যেকের বাসা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি। তাদের এ কার্যক্রমে সঙ্গে থাকবে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন।

করোনাভাইরাস- প্রতীকী ছবি

কোরবানির পশু জবাই থেকে কাটার পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক মানুষকে পরস্পরের কাছে আসতে হয়। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এটি করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে পশু জবাই করে মাংস বাসা-বাড়িতে পৌঁছে দেবে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন। আসন্ন ঈদুল আজহায় ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২-৩ হাজার কোরবানির পশু প্যাকেটজাত করার চিন্তা করছে ই-কমার্স। অনলাইনে পশু কেনার পর তারা এ কাজটি করবেন। ইতোমধ্যে অনলাইনে পশু বিক্রি হওয়ার পর সেগুলো রাখার জন্য মোহাম্মদপুর ও উত্তরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা নির্ধারণের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট’ কোরবানির পশু বেচা-কেনার পাশাপাশি তা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাই করে মাংস বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে যত্রতত্র পশু বেচা-কেনা ও জবাই করা বন্ধ হবে। ফলে পরিবেশও ভালো থাকবে। এবার পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা হলেও এর থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতও এভাবে কাজ করতে চায় ডিএনসিসি।

তিনি আরো বলেন, এ কার্যক্রম সফল হলে কোরবানির পশুর রক্ত ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যাবে। কোরবানির পশুর যেসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফেলে দেওয়া হয়, সেগুলো রপ্তানির জন্য সংরক্ষণ করা যাবে। পশাপাশি পশুর চামড়া সংরক্ষণও অতীতের তুলনায় সহজ হবে।