হঠাৎ বর্জ্যে সয়লাব বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত হঠাৎ করে প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং ছেঁড়া নাইলনের জালসহ শত শত টন বর্জ্যে সয়লাব হয়ে গেছে। এগুলোর সঙ্গে আটকা পড়ে ভেসে আসছে মৃত সামুদ্রিক প্রাণীও।

হঠাৎ করেই কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে শত শত টন বর্জ্য

গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে হঠাৎ এসব বর্জ্য সমুদ্র থেকে কিনারায় ভেসে আসতে শুরু করে। কক্সবাজারের দরিয়ানগর থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভেসে আসা এসব বর্জ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এসব বর্জ্যের সঙ্গে নাইলনের ছেঁড়া জালে আটকে মারা যাওয়া অন্তত ১০টি সামুদ্রিক কচ্ছপও ভেসে এসেছে।

আজ রোববার সকাল থেকে বর্জ্যগুলো সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় কিছু তরুণ। তবে দুপুর পর্যন্ত এ কাজে কোনো সরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে কক্সবাজারভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম রিয়াদ বলেন, শনিবার রাত থেকে ভেসে আসা এসব বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক বর্জ্য আর ছেঁড়া জাল দেখা গেছে। এগুলো সরিয়ে নিতে কক্সবাজারে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ এগিয়ে আসেনি।

বর্জ্যের সঙ্গে নাইলনের ছেঁড়া জালে আটকে মারা যাওয়া সামুদ্রিক কচ্ছপও ভেসে এসেছে

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ) আবু নাছের মো. ইয়াছিন বলেন, প্লাস্টিকসহ নানা ধরনের বর্জ্যের সঙ্গে আটকা পড়া সামুদ্রিক কচ্ছপও ভেসে এসেছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে একটা টিম পাঠানো হয়েছে। তারা কাছিমগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিত করবে। আর সুস্থগুলোকে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, সমুদ্রে শক্ত মনিটরিং না থাকায় বিদেশি জাহাজ থেকে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। এর ফলে সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এসব প্লাস্টিক কণায় রূপান্তরিত হয়ে মাছের খাদ্য শৃংখলে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে একটা সময় সেগুলো মানবদেহে চলে আসছে।

স্থানীয়রা জানান, এসব বর্জ্য বাংলাদেশের নয়, বরং অন্য দেশ থেকে সমুদ্রে ফেলা বর্জ্যগুলো উপকূলে চলে এসেছে। কেউ কেউ বলছেন, বর্জ্যগুলো মিয়ানমার থেকে সমুদ্রে ফেলা হয়েছে। পরে সেগুলো ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশ উপকূলে চলে এসেছে।