১৯ সেতুর ১৭টিই প্রকল্প পরিচালকের এলাকায়!

‘দক্ষিণাঞ্চলের লোহার সেতু পূনর্নির্মাণ/পূনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১৯টি লোহার সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এলজিইডি বিভাগ। সেই ১৯টি সেতুর ১৭টিই প্রকল্প পরিচালকের নিজ গ্রামে নির্মিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নির্মিত হচ্ছে সেতু

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় মোট ২৩৯টি সেতু রয়েছে। যার অধিকাংশই ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় জনগণ। তাই এসব এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ‘দক্ষিণাঞ্চলের লোহার সেতু পূনর্নির্মাণ/ পূনর্বাসন’ নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পটির আওতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের ২৮ এপ্রিল স্বাক্ষরিত ৪২ ও ৪৩ নং নোটিশে ১৯টি গার্ডার ব্রিজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপরই কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে দেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো। আর পুরো প্রকল্পটি পরিচালনা করছেন উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামের আবদুল হাই মিয়া।

মির্জাগঞ্জ উপজেলার ম্যাপ

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ গ্রামে অপ্রয়োজনে সতেরটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করছেন প্রকল্প পরিচালক। যার মধ্যে ‘ইঞ্জিনিয়ার কটেজ’ নামে তার বাড়ির আধা কিলোমিটারের মধ্যেই নির্মিত হচ্ছে সাতটি সেতু। এর মধ্যে আবার তিনটি সেতুর দূরত্ব মাত্র তিন শ মিটার। অথচ সেতুর অভাবে ওই অঞ্চলের বহু গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, সেখানে অনিয়ম হয়েছে কি না তা জানা নেই। এ ব্যাপারে ওই বিভাগের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে।

এদিকে মরা খালের ওপর সতেরটি সেতু নির্মাণের কাজ চলার কথা স্বীকার করেছেন উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার শেখ আজিম উর রশীদ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে হয়তো ওই খাল নদীতে পরিণত হবে, সেই আশায় সেখানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই এ কাজ নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুর হাই। এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পটুয়াখালীর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার বলেন, এখন সেখানে সেতু নির্মাণ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে পুরো জেলায় আরো সেতু নির্মাণ করা হবে।