এক ষাঁড়েই সরকারের আয় প্রায় ২ কোটি টাকা!

পাকিস্তানি শাহিওয়াল গাভী ও ফ্রিজিয়ান ক্রস ব্রিডের দ্বারা দেশেই জন্ম নেয়া এই ষাঁড় দিয়ে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৮০০ টাকা আয় করেছে সরকার। ২০০৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গরুর খামারিদের কাছে ষাঁড়টির সিমেন বিক্রি করে এই আয় হয়েছে।

এফআর-২৫ আইডির ষাঁড়টি

সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে এফআর-২৫ আইডি নম্বরের ষাঁড়টি থেকে ১৬ বছরে ৬ লাখ ২৩ হাজার ৩৬০ ডোজ সিমেন সংগ্রহ করা হয়েছে। এর প্রতি ডোজ সিমেন খামারিদের কাছে ভর্তুকি দিয়ে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের কর্মকর্তারা জানান, এই ষাঁড়ের সিমেন থেকে জন্ম নেয়া গাভী ১৭-২২ লিটার দুধ দিচ্ছে। এ গাভীগুলো দীর্ঘজীবী হওয়ার পাশাপাশি বলদ গরুগুলোর মাংসও বেশি পাওয়া যায়। এসব কারণে এই ষাঁড়ের সিমেনের চাহিদা বেশি।

এটিসহ সাভারের খামারে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা নানা জাতের ১৫৬টি ব্রিডিং ষাঁড় রয়েছে। এর একটি ষাঁড় থেকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিবারে ৫০০ ডোজ সিমেন সংগ্রহ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় গেলো বছরে সিমেন সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ডোজ।

সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের ফাইল ছবি

জানা গেছে, এসব সিমেন মাইনাস ৯৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষিত থাকায় ৬০-১০০ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। চাহিদা অনুযায়ী সারাদেশের খামারিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। কেবল ২০১৯ সালেই ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার সিমেন বিক্রি করা হয়েছে। ভর্তুকি মূল্যে সিমেন বিক্রির করেও এত টাকা আয় হয়।

এর ফলে দেশে উন্নত জাতের গরুর উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করেন পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ। এতে দেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন অর্জনের পাশাপাশি কোরবানির সময় ভারতীয় গরুর চাহিদাও কমেছে বলে জানান তিনি।

সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার

দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের এক দশকে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাংসের উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনই দুধের যোগানও বেড়েছে অনেক গুণ। সরকারি নানা পদক্ষেপে উভয় ক্ষেত্রেই চাহিদা ও যোগানে ভারসাম্য এসেছে। যার সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ।

বলা হচ্ছে, বর্তমানে নিট প্রাণিজ আমিষের বার্ষিক চাহিদার ৫৭.৭২ শতাংশ যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের মাংসের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আব্দুল জব্বার শিকদার।