নোয়াখালীর ভাসানচরে নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিতে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে এখন পর্যন্ত তাদের সেখানে পাঠানো যাচ্ছে না। তবে আশার কথা হচ্ছে, ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। সবমিলিয়ে এসব পরিবারে প্রায় এক হাজারের মতো মানুষ আছে।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন প্রকল্প
তাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুতই সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের একটি সূত্র। তবে সরকারের কোনো ঘোষণা না থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য দিতে রাজি হয়নি ওই সূত্র। পরে বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে খোঁজ নিলে তারা ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন। এমনকি অনেকে নামও জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতাদের একটি দলকে ভাসানচরে নিয়ে গিয়ে সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখানো হয়। এরপর তারা ফিরে এসে নিজেদের জনগোষ্ঠীকে এ সম্পর্কে অবহিত করেন। প্রথমদিকে কেউ যেতে রাজি না হলেও এখন ভেতর ভেতর অনেকেই সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করছেন। তাদের ভাষ্য হচ্ছে- কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে ভাসানচরের খোলামেলা প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেকটাই ভালো। রুমগুলো ছোট হলেও মানিয়ে নেয়া যাবে।
কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প
সূত্র জানায়, অন্তত ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে ধাপে ধাপে এসে ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারে নিজেদের আগ্রহের কথা জানান এবং নাম রেজিস্ট্রার করেন। এর পরই তাদের সেখানে পাঠানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে সরকার। যদি এই দলটিকে পাঠানো যায়, তাহলে আরো অনেক পরিবার সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। সরকার মহলের এমনটাই ধারণা।
ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে, এমন পরিবারগুলোর একটি তালিকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাসানচর রোহিঙ্গাদের কাছে ‘ঠেঙ্গার চর’ নামে পরিচিত। সেখানে যেতে রোহিঙ্গা শিবির থেকে এখন বেশ সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে। দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও প্রথম দফায় তিনশ পরিবারকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা বলেন, সরকার কাউকে জোর করে ভাসানচর পাঠাবে না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে স্বেচ্ছায় কিছু রোহিঙ্গা পরিবার সেখানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।