হাসপাতালে মন্ত্রী, বাইরে দাঁড়িয়ে ‘রোগীরা’

একটি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স ও সার্জরি বিভাগ উদ্বোধন করতে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। উদ্বোধন শেষে হাসপাতালের সভাকক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যও রাখেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা হাসপাতালের ভেতর অবস্থান করেন তিনি। এদিকে, মন্ত্রী আসায় হাসপাতালের দুটি ফটকই বন্ধ করে রাখা হয় প্রায় দুই ঘণ্টা। এ সময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের অপেক্ষা করতে হয় ফটকের বাইরে।

এভাবেই হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউ ও হাসপাতালে। এতে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স ও সার্জারি বিভাগ উদ্বোধন করতে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি আসার আধা ঘণ্টা আগেই হাসপাতালের দুটি ফটকই বন্ধ করে দেয় কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা। পরে দুপুর দেড়টার দিকে মন্ত্রী হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গেলে ফটক পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

প্রায় দুই ঘণ্টা ফটক বন্ধ থাকাকালীন কোনো রোগী বা ভর্তি রোগীর স্বজনদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা। কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে হাসপাতালের বির্হিবিভাগের সেবাও। এ সময় রোগী ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের বাইরেই অপেক্ষা করেন। এ জন্য অনেক রোগী ও রোগীর স্বজনরা ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউ ও হাসপাতাল- ফাইল ছবি

তাদের কয়েকজন জানান, রোগী নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের কারণে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না গার্ডরা। বলছে, চিকিৎসকরা সবাই মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে। মন্ত্রী চলে গেলে তারপর আবার চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু হবে।

হাসপাতালটিতে ভর্তি এক রোগীর ছেলে বলেন, তারা বাবা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বাবার জন্য খাবার আনতে বাইরে গেছেন। কিন্তু ফিরে এসে দেখেন গেট বন্ধ। অনেকবার অনুরোধ করার পরও ঢুকতে দিচ্ছে না। তাই ঘণ্টা খানেক ধরে গেটে দাঁড়িয়ে আছেন।

রোগীদের কেনো ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না- জানতে চাইলে ফটকে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা জানান, কর্তৃপক্ষই তাদের নির্দেশ দিয়েছে। তাই তারা গেট বন্ধ রেখেছেন।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। মন্ত্রী আসায় সম্ভবত অতিরিক্ত কাজ দেখাতে গিয়ে আনসার সদস্যরা এমন ভুল করেছে। এ জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।