প্রধানমন্ত্রী: ভ্যাকসিনের প্রযুক্তি হস্তান্তর করুন

উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে স্থানীয়ভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারে, সেজন্য এর প্রযুক্তি হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে সবার ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক সহযোগিতার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

ভ্যাকসিনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জাতিসংঘের ৩১তম বিশেষ অধিবেশনে কোভিড-১৯ বিষয়ে শুরু হওয়া আলোচনায় অংশ নিয়ে শুক্রবার এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশেষ এ অধিবেশনের আয়োজন করেন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) বর্তমান চেয়ার আজারবাইজান এবং জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল।

ধারণ করা ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তি হস্তান্তর, সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক সহায়তাসহ বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জরুরি মনোযোগ এবং আরো সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

করোনার ভ্যাকসিন, প্রতীকী ছবি

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের করোনার ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা রয়েছে এবং সুযোগ পেলে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে। করোনার ভ্যাকসিনকে গোটা বিশ্বের জন্য একটি বৈশ্বিক জনপণ্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অ্যাক্ট এবং কোভ্যাক্স সুবিধার উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর ট্রিপস চুক্তির (ট্রেড রিলেটেড অ্যাসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপারটি রাইটস) আওতায় আইপি রাইটস ওয়েভার ব্যবহার করা যেতে পারে।

যথাসময়ে ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য মানসম্মত ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের উন্নয়ন এজেন্ডা সমতার নীতির মাধ্যমে পরিচালিত এসডিজি অর্জনে যেমন সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়, তেমনিভাবে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও কাউকে পেছনে রাখা ঠিক হবে না। সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে তা আমাদের মহামারি পরাস্ত, জীবন বাঁচানো এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

কোভিড-১৯ এর মহামারি মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক সহায়তাসহ যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। জাতিসংঘ, আইএফআই ও সুশীল সমাজকে জাতীয় সরকারগুলোর পাশাপাশি তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। অর্থাৎ করোনার মহামারি মোকাবেলায় একে অপরের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

সারা বিশ্ব এখনো প্রাণঘাতী এ ভাইরাস এবং এর প্রভাব মোকাবেলায় এক কঠিন সময় পার করছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রেক্ষাপটে এ অধিবেশন সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে।

বিশ্বের সর্বত্র কোভিড-১৯ এর মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে কোনো একটি স্থানে কখনোই একে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি মোকাবেলায় যৌথ পদক্ষেপ, বৈশ্বিক সংহতি এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। সেই বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সবার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।